পাকিস্তানে আওরঙ্গজেব সম্পর্কে কী পড়ানো হয়? জেনে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব পাকিস্তানে: বর্তমানে ভারতে আওরঙ্গজেবের নাম নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলায় তো এই বিতর্ক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এই সহিংসতার মূল কারণ দুই ভিন্ন মতাদর্শের সংঘর্ষ।
একদিকে, কিছু লোক আওরঙ্গজেবকে মহান সম্রাট বলে প্রশংসা করছে, অন্যদিকে, অন্য একটি পক্ষ তাকে অত্যাচারী বলে অভিহিত করে তার সমাধি ধ্বংস করার দাবি তুলেছে। ভারতে আওরঙ্গজেবকে ঘিরে বিতর্ক থাকলেও, কখনও কি ভেবেছেন পাকিস্তানে তাকে কীভাবে উপস্থাপন করা হয়?
পাকিস্তানের পাঠ্যবইগুলিতে আকবরকে মহান মুঘল সম্রাট বলার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছে। অন্যদিকে, আওরঙ্গজেবকে ইসলামের রক্ষক ও একজন মহান মুসলিম শাসক হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ঐতিহাসিকদের মধ্যে আওরঙ্গজেব নিয়ে বিতর্ক
ঐতিহাসিকদের মধ্যে আওরঙ্গজেবকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার আওরঙ্গজেবকে কট্টরপন্থী ও রক্ষণশীল শাসক বলে মনে করতেন। অন্যদিকে, শিবলি নোমানিসহ কিছু ঐতিহাসিক যুক্তি দেন যে আওরঙ্গজেবের নীতিগুলি ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।
ভারতে ‘দার-উল-ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা ছিল আওরঙ্গজেবের লক্ষ্য
এ শোর্ট হিস্ট্রি অব আওরঙ্গজেব বইতে দাবি করা হয়েছে যে আওরঙ্গজেবের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে একটি সম্পূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র, দার-উল-ইসলাম, প্রতিষ্ঠা করা এবং বিরোধীদের নির্মূল করা। অন্যদিকে, শিবলি নোমানি তার বই ‘আওরঙ্গজেব আলমগীর পর এক নজর’-এ লিখেছেন যে, ‘আওরঙ্গজেবের ইসলামের প্রতি উৎসাহ একজন সাধুর মতো নয়, বরং একজন কূটনৈতিক শাসকের মতো ছিল।’
পাকিস্তানে আওরঙ্গজেবকে আদর্শ মুসলিম নেতা হিসেবে দেখা হয়
পাকিস্তানে আওরঙ্গজেবকে একজন আদর্শ মুসলিম নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার প্রতি এই শ্রদ্ধার কারণ হিসেবে তার ইসলামের প্রতি অবিচল বিশ্বাসকে তুলে ধরা হয়। আল্লামা ইকবাল আওরঙ্গজেবকে ভারতের মুসলিম জাতীয়তার প্রতিষ্ঠাতা ও একজন দেশপ্রেমিক নেতা বলে প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, মৌলানা আবুল আলা মওদুদীসহ অনেক প্রভাবশালী নেতা আওরঙ্গজেবের ইসলামের প্রতি নিষ্ঠার জন্য তাকে উচ্চ মর্যাদায় অভিহিত করেছেন।