৪৪ বছর পর ন্যায়বিচার: দিহুলী গণহত্যার তিন দোষীর ফাঁসি

ফিরোজাবাদের জসরানার দিহুলী গ্রামে ১৯৮১ সালের ১৮ নভেম্বর সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যার রায় অবশেষে ঘোষণা করা হলো। মঙ্গলবার আদালত তিন দোষী—কাপ্তান সিং, রামসেবক ও রামপালকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ২৪ দলিত নিহত হয়েছিলেন, যা ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম নির্মম গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত। একই সঙ্গে আদালত রামসেবক ও কাপ্তান সিংকে দুই লাখ টাকা করে এবং রামপালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে। রায় ঘোষণার পর দোষীরা আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়ে, তাদের পরিবারও আদালতের বাইরে অশ্রুসজল হয়।
বিচারপতি ইন্দিরা সিং-এর বিশেষ আদালতে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতে উপস্থিত সরকার পক্ষের আইনজীবী রোহিত শুক্লা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা তুলে ধরেন এবং ফাঁসির দাবি জানান। মামলার বিচারিক কার্যক্রম দীর্ঘ ৪৪ বছর চলার পর অবশেষে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলো। তবে দোষীরা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।
১৯৮১ সালের ১৮ নভেম্বর দিহুলী গ্রামে ডাকাতদের একটি দল রাতের অন্ধকারে গ্রামে প্রবেশ করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৪ জন নিরপরাধ দলিতকে হত্যা করে। এই ঘটনার পর দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া চলে, যেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক চার্জ গঠন করা হয়। মূল অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে, আর কয়েকজন এখনো পলাতক।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত দোষীদের প্রথমে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন ব্যারাকে রাখা হবে, যেখানে তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এই রায়ের মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো, যা প্রমাণ করে যে ন্যায়বিচার দেরিতে আসতে পারে, তবে তা নিশ্চিতভাবেই আসে।