সুনিতা উইলিয়ামস যে মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস অবস্থান করেছিলেন, তার খরচ কত? মহাকাশচারীরা কেন মহাকাশচারীদের কাছে যান তা বুঝুন

মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার পর, সুনিতা উইলিয়ামস যে মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস অবস্থান করেছিলেন, তার খরচ কত? মহাকাশচারীরা কেন মহাকাশচারীদের কাছে যান তা বুঝুন পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। ৯ মাস ধরে তিনি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (ISS)-এ ‘বন্দী’ ছিলেন। ISS থেকে বের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার স্পেসএক্স ক্যাপসুল ফ্লোরিডার তালাহাসি উপকূল থেকে কিছুটা দূরে মেক্সিকো উপসাগরে অবতরণ করে।
আমরা আজ সুনিতা উইলিয়ামস যে মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস অবস্থান করেছিলেন, তার খরচ কত? মহাকাশচারীরা কেন মহাকাশচারীদের কাছে যান তা বুঝুন-এর যাত্রার পরিবর্তে সেই স্পেস স্টেশন সম্পর্কে জানব, যেখানে তিনি ৯ মাস কাটিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন মহাকাশে অবস্থিত একটি গবেষণাগার। এটি ১৯৯৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়। ২ নভেম্বর ২০০০ সাল থেকে এখানে মহাকাশচারীরা বসবাস করছেন।
ISS-এর দাম কত?
ISS হলো বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প, যার নির্মাণে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। এত বিশাল খরচের কারণে কোনো একক দেশ এর মালিক নয়। এটি নাসা, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা, রাশিয়া, কানাডা এবং জাপান মিলিতভাবে তৈরি করেছে। নাসা প্রতি বছর এই স্পেস স্টেশন পরিচালনার জন্য ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। মে ২০২২ পর্যন্ত ২০টি দেশের ২৫৮ জন মহাকাশচারী ISS পরিদর্শন করেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মহাকাশচারীরা রয়েছেন।
স্পেস স্টেশন কত বড়?
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ISS-এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১০৯ মিটার। এর ওজন ৪১৯,৭২৫ কেজি, যার মধ্যে ভিজিটিং যানবাহনও অন্তর্ভুক্ত। একমাত্র সোলার প্যানেলই এক একর জায়গা জুড়ে রয়েছে।
স্পেস স্টেশনে সাতটি ঘুমানোর কক্ষ আছে। এছাড়া, এতে দুটি বাথরুম, একটি জিম এবং ৩৬০-ডিগ্রি ভিউসহ জানালা রয়েছে, যা থেকে পৃথিবী দেখা যায়।
স্পেস স্টেশন কোথায় এবং কীভাবে চলে?
ISS পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০২ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করে এবং কক্ষপথে ঘোরে। এর গতিপথ বিশ্বের ৯০% জনসংখ্যা দেখতে পারে। এটি সৌর প্যানেল দ্বারা চালিত হওয়ার কারণে, টেলিস্কোপের মাধ্যমে এটিকে দেখা সম্ভব।
ISS-এর গতি কত?
ISS প্রতি ৯০ মিনিটে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এর গতি প্রায় ২৮,০০০ কিমি/ঘণ্টা। এক দিনে এটি পৃথিবীকে এতবার প্রদক্ষিণ করে, যা পৃথিবী থেকে চাঁদ পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসার দূরত্বের সমান।
স্পেস স্টেশনে কী করা হয়?
স্পেস স্টেশনে পৌঁছানোর পর মহাকাশচারীরা সাধারণত ৬ মাস অবস্থান করেন। এই সময়ে তারা বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ISS-এর রক্ষণাবেক্ষণ করেন। কাজের পাশাপাশি, মহাকাশচারীরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ব্যায়াম ও ব্যক্তিগত যত্ন নেন। মাঝে মাঝে তারা স্পেস স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে স্পেসওয়াক করেন।
বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য অন্যান্য গ্রহে বসবাসের উপায় খুঁজে বের করা। তাই, ISS হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহে বসবাসের জন্য গবেষণা করতে পারেন।