বিশ্বজুড়ে মানুষ বিভিন্ন ধর্ম অনুসরণ করে, যার মধ্যে খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম এবং হিন্দুধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে খ্রিস্টধর্ম এবং ইসলামের ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার মতো মহাদেশে শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে।

ইউরোপ এবং আমেরিকায় খ্রিস্টধর্ম প্রাধান্য পেয়েছে, অন্যদিকে এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু অংশে ইসলামই সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম। অন্যদিকে, হিন্দুধর্ম মূলত ভারতে কেন্দ্রীভূত। নেপালে, এমন কিছু লোক আছে যারা সনাতন ধর্ম অনুসরণ করে। এগুলো ছাড়াও অন্যান্য দেশে হিন্দু জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। গত কয়েক বছরে, মাত্র কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সকল ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টার তার প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে যে বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় প্রোফাইল ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে ২০৫০ সাল পর্যন্ত প্রবণতা পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উর্বরতার হার এবং প্রধান ধর্মগুলিতে তরুণদের অনুপাতের মতো বিষয়গুলি ধর্ম-ভিত্তিক জনসংখ্যার পরিবর্তনকে প্রভাবিত করছে। এছাড়াও, মানুষ ঘন ঘন তাদের ধর্ম পরিবর্তন করছে, যা বিভিন্ন ধর্মের জনসংখ্যার উপরও প্রভাব ফেলছে। প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী দশকগুলিতে খ্রিস্টধর্ম সর্বাধিক অনুসরণীয় ধর্ম হিসেবেই থাকবে, তবে মুসলিম জনসংখ্যা সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে, ২০৫০ সালের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা খ্রিস্টানদের সমান হয়ে যাবে। ফলস্বরূপ, ইসলাম বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করবে।

কিছু আকর্ষণীয় তথ্য নিম্নরূপ:

পিউ রিসার্চের এক প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী ২৫ বছরে (অর্থাৎ ২০৫০ সালের মধ্যে) বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ইসলামের অনুসারীদের প্রায় সমান হবে। ইউরোপে, আগামী আড়াই দশকের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এই অঞ্চলে ইসলামের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সে, কোনও ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

২০৫০ সালের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিস্টান জনসংখ্যা হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং ইহুদিরা আর দ্বিতীয় বৃহত্তম অ-খ্রিস্টান জনসংখ্যা থাকবে না। মুসলিমদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে পিউ রিসার্চ রিপোর্ট অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। ভারত ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হয়ে উঠবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ভারত হিন্দু ধর্মের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে রয়ে যাবে এবং আগামী ২৫ বছর ধরে হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। উপরন্তু, এটি উল্লেখ করে যে বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

২৫ বছর পর খ্রিস্টান এবং মুসলিমরা সমান হবে

পিউ রিসার্চের প্রতিবেদনে কিছু চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। এই অনুযায়ী, আগামী ২৫ বছরে (অর্থাৎ ২০৫০ সালের মধ্যে) খ্রিস্টান ও মুসলিমদের জনসংখ্যা প্রায় সমান হবে। এর অর্থ হলো, বিশ্বে খ্রিস্টানদের সংখ্যা মুসলমানদের সংখ্যার সমান হবে। আগামী আড়াই দশকের মধ্যে, ইউরোপে মুসলিমদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এইভাবে ইউরোপে ইসলামের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। আমেরিকা এবং ফ্রান্সে, এমন লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে যাদের কোনও ধর্মের সাথে কোনও সম্পর্ক থাকবে না। ২০৫০ সালের মধ্যে, আমেরিকায় খ্রিস্টান জনসংখ্যা হ্রাস পাবে এবং ইহুদিরা আর দ্বিতীয় বৃহত্তম অ-খ্রিস্টান জনসংখ্যা থাকবে না। ইসলাম ধর্ম অনুসরণকারী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে

পিউ রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা হবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি। ভারত এই ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়াকে পিছনে ফেলে দেবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ভারত হিন্দুদের একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই থাকবে এবং আগামী ২৫ বছরে হিন্দুদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা একই থাকবে বলেও জানা গেছে।