নীল ড্রাম দেখে মানুষ কেন পালাচ্ছে? দোকানগুলিতে নীরবতা, মিরাটের মর্মান্তিক সত্য!

নীল ড্রাম দেখে মানুষ কেন পালাচ্ছে? দোকানগুলিতে নীরবতা, মিরাটের মর্মান্তিক সত্য!

উত্তর প্রদেশের মিরাটে সৌরভ রাজপুত হত্যাকাণ্ড কেবল মানুষকেই হতবাক করেনি, বরং একটি অনন্য সমস্যাও তুলে ধরেছে। এই ক্ষেত্রে, সৌরভের স্ত্রী মুসকান রাস্তোগি এবং তার প্রেমিক সাহিল একসাথে সৌরভকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

হত্যার পর, তারা দুজনেই দেহটি ১৫ টুকরো করে একটি নীল ড্রামে আটকে রাখে। শুধু তাই নয়, মৃতদেহ লুকানোর জন্য ড্রামটি সিমেন্ট দিয়ে ভরাট করে সিল করে দেওয়া হয়েছিল। এই ভয়াবহ ঘটনার পর, মুসকান এবং সাহিল কোনও চিন্তা ছাড়াই দুই সপ্তাহের জন্য হিমাচল প্রদেশে চলে যান। কিন্তু এই ঘটনার প্রভাব এখন মিরাটের ঢোল ব্যবসায়ীদের উপর পড়ছে, যেখানে নীল ঢোল দেখে মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

মুসকান এবং সাহিল মিরাটের জালি কোঠি এলাকা থেকে এই নীল ড্রামটি কিনেছিলেন। কিন্তু এখন এই একই ঢোল সেখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে ঘন্টাঘর এলাকার ঢোলের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় থাকত, কিন্তু আজ সেখানে নীরবতা। স্থানীয় দোকানদাররা বলছেন যে এই হত্যাকাণ্ডের পর মানুষ নীল ড্রামকে ভয় পেতে শুরু করেছে। এখন কোনও গ্রাহক ড্রাম কিনতে রাজি নন, যার কারণে দোকানগুলি খালি পড়ে আছে এবং ব্যবসা স্থবির হয়ে পড়েছে। একজন দোকানদার হতাশার সুরে বললেন, “অপরাধীরা জেলে, তাহলে ঢোলের দোষ কী? কিন্তু এখন মানুষ নীল রঙ দেখলেই পালিয়ে যায়।”

এই হত্যাকাণ্ড এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, মানুষের মনে নীল ঢোলের প্রতি এক অদ্ভুত ভয় তৈরি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন যে তারা গ্রাহকদের বোঝানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তারা ঢোলের প্রশংসা করে এবং জল, শস্য বা অন্যান্য জিনিসপত্র সংরক্ষণের জন্য এটি কতটা কার্যকর তাও বলে। কিছু দোকানদার এমনকি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এখন তারা গ্রাহকদের পরিচয়পত্র দেখেই কেবল ড্রাম বিক্রি করবেন, যাতে কোনও অপব্যবহার না হয়। কিন্তু এত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, গ্রাহকরা বাজারের দিকে ঝুঁকতে প্রস্তুত নন। ঢোল বিক্রেতাদের ব্যবসা ভেঙে পড়েছে এবং তারা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এই ঘটনাটি কেবল একটি নৃশংস অপরাধের গল্পই নয়, বরং এটি দেখায় যে একটি দুর্ঘটনা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে। মিরাটের ব্যবসায়ীরা এখন চিন্তিত যে পরিস্থিতি একই রকম থাকলে তাদের ব্যবসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। একজন ব্যবসায়ী বলেন, আগে প্রতিদিন ২০-২৫টি ড্রাম বিক্রি হত, কিন্তু এখন সপ্তাহে একটি ড্রামও বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই হত্যাকাণ্ড মানুষের মনে এমন ভয় তৈরি করেছে যে তারা ঢোলকে অপরাধের সাথে যুক্ত করতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন যে এই আশঙ্কা ভিত্তিহীন কারণ ড্রামটি কেবল একটি সাধারণ পাত্র যা অপরাধীরা অপব্যবহার করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *