বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বে পরিবর্তনের গুঞ্জন: দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। সুকান্ত মজুমদার কি পুনরায় এই দায়িত্বে থাকবেন, নাকি দল নতুন কোনো মুখকে সামনে আনবে, এই প্রশ্ন এখন রাজ্য রাজনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয়। এই পরিস্থিতিতে, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক মন্তব্য এই জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণের সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ জানান, “দলের কর্মীরাও এই বিষয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সময়মতো এবং যথাযথ নিয়ম মেনেই এই ঘোষণা করা হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আলোচনা চলছে, কিন্তু এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।” দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, রাজ্য সভাপতির পদ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে আলোচনা চললেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও বাকি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, দলের শৃঙ্খলা মেনেই সঠিক সময়ে সব কিছু সম্পন্ন হবে।
বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে সেই প্রক্রিয়া চলছে। দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, এই নির্বাচন শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, সারা দেশেই একই নিয়মে হচ্ছে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে যিনি যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, তাকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হবে।” সুকান্ত মজুমদারের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে দলের অনেকেই মনে করছেন, নির্বাচনের আগে কোনো বড় পরিবর্তন আনতে চায় না বিজেপি। বরং তারা “ধীরে চলো” নীতি অনুসরণ করতে আগ্রহী।
দিলীপ ঘোষের সক্রিয় ভূমিকা দেখে অনেকেই মনে করছেন, তিনি পুনরায় রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেতে পারেন। যদিও তিনি নিজে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “আমি গত ১০ বছর ধরে একই রকম সক্রিয়। যারা আমাকে চেনেন না, তারাই হয়তো এমন কথা বলছেন।”
রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে দিলীপ ঘোষ জানান, “মনোনয়ন পর্বের পরই নির্বাচন হবে। এখনও মনোনয়ন শুরু হয়নি, তবে একবার শুরু হলে দ্রুত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হবে।”
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বে বিজেপি রাজ্য রাজনীতিতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে। তবে এখন দলের অন্দরে এই পদ নিয়ে আলোচনা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, নির্বাচনের আগে সুকান্ত মজুমদারকেই রেখে দেওয়া উচিত, কারণ দল কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না।
তবে, জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণার পর দলের মধ্যে যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তা যাতে নির্বাচনের আগে আরও না বাড়ে, সেই বিষয়েও দল সতর্ক রয়েছে। তাই বিজেপি হয়তো কোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আনতে চাইছে না।
সব মিলিয়ে, বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে অপেক্ষা ক্রমশ বাড়ছে। দিলীপ ঘোষের কথায়, “সব সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকেই আসবে,” তাই চূড়ান্ত ঘোষণার জন্য সবার নজর এখন দিল্লির দিকে।