ব্যাংককে ভবন ধসের রহস্য: চীনের হাত? থাই সরকারের তদন্ত শুরু

ব্যাংককে ভবন ধসের রহস্য: চীনের হাত?  থাই সরকারের তদন্ত শুরু

মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি ৩৩ তলা নির্মাণাধীন আকাশচুম্বী ভবন ধসে পড়ার ঘটনা বিশ্বব্যাপী চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত আট জনের মৃত্যু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন, যার উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। তবে, ভবন ধসের পেছনে চীনা কো ম্পা নির সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকায় থাইল্যান্ড সরকার তদন্ত শুরু করেছে এবং সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) মায়ানমারের মান্দালয় এলাকায় ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূরে ব্যাংককে তীব্র কম্পন অনুভূত হওয়ায় এই আকাশচুম্বী ভবন মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, এটি থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও ভিয়েতনাম সহ আটটি দেশে অনুভূত হয়েছিল। তবে, ব্যাংককের এই ভবনের ধসন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত ঘটায় সন্দেহ জাগছে যে, নির্মাণ কাজে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি ছিল।

থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এক বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। থাই পুলিশ কমান্ডার তিরাসাক থংমো জানিয়েছেন, “আমাদের দল এবং উদ্ধারকারী কুকুররা জীবিত থাকতে পারে এমন সকল মানুষকে খুঁজে বের করার জন্য অব্যাহতি ছাড়া কাজ করছে।” এই ভবন, যা ইতালীয়-থাই ডেভেলপমেন্ট পিএলসি (ITD) এবং চায়না রেলওয়ে নং ১০ (থাইল্যান্ড) লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছিল, তাতে চীনা কো ম্পা নির ১৯ শতাংশ শেয়ার ছিল। এই সংযোগ নিয়ে এখন সন্দেহের ছায়া পড়েছে।

ডেমোক্র্যাট পার্টির একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও রাজনীতিবিদ অধ্যাপক সুচাচাভি সুওয়ানসাওয়াস ইংলিশ ডেইলি টেলিগ্রাফকে বলেন, “আপনি অন্য সব ভবনের দিকে তাকান, এমনকি নির্মাণাধীন উঁচু ভবনগুলোও, সেগুলো নিরাপদ। তাই হয় নকশা ভুল ছিল অথবা নির্মাণ ভুল ছিল, কিন্তু এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঞ্চানো খুব তাড়াতাড়ি হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের ভবনের জন্য ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নকশা অত্যাবশ্যক, তাই তদন্তে সব কিছু পরিস্কার হবে।”

তবে, সামাজিক মাধ্যমে এবং কিছু খবরের প্রতিবেদনে চীনা কো ম্পা নির সম্ভাব্য দায়িত্ব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে, নির্মাণ কাজে গুণমানের অভাব বা ব্যাংককের ভূ-ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা না করা এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হতে পারে। তবে, এই দাবিগুলো এখনও নিশ্চিত নয় এবং থাই সরকারের তদন্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *