মহাকুম্ভের ভাইরাল স্টার মোনালিসার পরিচালক সনোজ মিশ্র ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার

মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫-এ ভাইরাল হওয়া মোনালিসা ভোঁসলেকে একটি ছবির প্রস্তাব দেওয়া পরিচালক সনোজ মিশ্রকে ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্ট থেকে জামিন খারিজের পর, দিল্লির নবী করিম থানা পুলিশ তাকে আজ সন্ধ্যায় (৩১ মার্চ, ২০২৫) গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়া ও চলচ্চিত্র জগতে হাহাকার সৃষ্টি করেছে, যেখানে মোনালিসা একজন সাধারণ মালা বিক্রেতা থেকে রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছিলেন।
অভিযোগ অনুসারে, সনোজ মিশ্র ২০২০ সালে টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবতীর (ভুক্তভোগী) সঙ্গে পরিচিত হন, যিনি ঝাঁসিতে বসবাস করতেন এবং নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ভুক্তভোগীর জানানো হয়েছে যে, ১৭ জুন, ২০২১-এ সনোজ তাকে ঝাঁসি রেলস্টেশনে ডেকে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন, যার ফলে ভয়ে তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে বাধ্য হন। পরের দিন, ১৮ জুন, তিনি আবার হুমকি দিয়ে তাকে একটি রিসোর্টে নিয়ে যান, যেখানে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়িয়ে ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী এফআইআর-এ অভিযোগ করেছেন যে, অভিযুক্তরা তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তৈরি করেছিল এবং সেগুলো জনসমক্ষে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বারবার শারীরিক শোষণ চালিয়েছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, “সনোজ মিশ্র আমাকে চলচ্চিত্রে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করেছেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন।”
মোনালিসার কাহিনী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হলেও, তিনি নিজে এই মামলার সরাসরি ভুক্তভোগী নন। মহাকুম্ভ মেলায় মালা বিক্রি করে ভাইরাল হওয়া মোনালিসাকে সনোজ মিশ্র তাদের পরবর্তী ছবি “দ্য ডায়েরি অফ ২০২৫”-এ অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে মোনালিসা ও সনোজকে একসঙ্গে বিমানে ভ্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের কারণ হয়েছিল। কিছু ব্যবহারকারী তাকে “মোনালিসার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা” করছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন। সনোজ সে সময় জবাব দিয়েছিলেন, “যখন আমি জানতে পারি যে কুম্ভমেলায় মোনালিসা নামে একটি মেয়ে ভাইরাল হচ্ছে, তখন তাকে প্রথম দেখেছিলাম। লোকেরা তাকে হয়রানি করছিল, কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি। তার পরিবারের কোনও ঘর নেই, তারা তাঁবুতে থাকে। আমি তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম।” তবে, এই বক্তব্য এখন নতুন আলোকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
দিল্লি হাইকোর্টে জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা সমস্ত কোণ থেকে তদন্ত করছি।” এই মামলা চলচ্চিত্র জগতের এক নতুন দিক উন্মোচিত করছে, যেখানে উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের প্রতারণা ও শোষণের ঘটনা বারবার দেখা যাচ্ছে।