ফোন হ্যাক করে স্ত্রীর চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার: স্বামী গ্রেপ্তার

ফোন হ্যাক করে স্ত্রীর চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার: স্বামী গ্রেপ্তার

নাগপুর, ২ এপ্রিল ২০২৫: সন্দেহের বশে স্বামীর ফোন হ্যাক করা এক ২৪ বছর বয়সী মহিলার জীবন উলটপালট হয়ে গেছে। নাগপুরের এই গৃহবধূ তার ৩২ বছর বয়সী স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে এমন প্রমাণ পান, যা তাকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধ্য করে। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিক মহিলাকে ব্ল্যাকমেল ও যৌন শোষণ করছিলেন, এমনকি ১৯ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সন্দেহ থেকে সত্যের মুখোমুখি

মহিলার অভিযোগ, তার স্বামী প্রায়ই অস্বাভাবিক যৌন দাবি করতেন এবং তাকে অদ্ভুত কাজে বাধ্য করতেন। সম্প্রতি তার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করার পর সন্দেহ জাগে। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়েছিল, তার একাধিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই তার ফোন ক্লোন করে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করি।” চ্যাটে তিনি আপত্তিকর ছবি, ভিডিও এবং মহিলাদের সঙ্গে কথোপকথন দেখতে পান, যা তার স্বামীর অন্ধকার দিক উন্মোচন করে।

প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেলের জাল

তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে মহিলাদের ফাঁদে ফেলতেন। তিনি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে ছবি ও ভিডিও ধরে রাখতেন, পরে সেগুলো ব্যবহার করে টাকা আদায় ও শোষণ করতেন। পাচপৌলি থানার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “তিনি একসঙ্গে ৪-৫ জন মহিলার সঙ্গে প্রতারণা চালাচ্ছিলেন। ভুক্তভোগীদের ভয়ে চুপ থাকার সুযোগ নিতেন।”

১৯ বছরের তরুণীর সাহস

হ্যাক করা চ্যাট থেকে স্ত্রী একাধিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর মধ্যে ১৯ বছরের এক তরুণী এগিয়ে আসেন। তিনি জানান, অভিযুক্ত ‘সাহিল শর্মা’ নামে পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। “আমি নাগপুরে পড়তে এসেছিলাম। সে আমার ধর্ম ও বৈবাহিক অবস্থা লুকিয়ে প্রতারণা করে। পরে আমাকে ধর্ষণ করে ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেল করত,” বলেন তিনি। স্ত্রীর উৎসাহে তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন, যা গ্রেপ্তারির পথ খোলে।

ভুয়ো পরিচয়ে অপরাধ

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ভুয়ো নামে মহিলাদের ফাঁদে ফেলতেন। তিনি আধ্যাত্মিক সমাবেশে গিয়ে শিকার খুঁজতেন এবং হোটেলে দেখা করে অপরাধ করতেন। নাগপুরে পানের দোকান চালানো এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রী আগেই নিষ্ঠুরতার মামলা দায়ের করেছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “তার কাছ থেকে এক ভুক্তভোগীর আংটি বিক্রির টাকাও উদ্ধার হয়েছে।”

স্ত্রীর সাহসিকতা

এই ঘটনায় স্ত্রীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তিনি কেবল নিজের স্বামীর অপরাধ উন্মোচন করেননি, বরং ভুক্তভোগীদের সাহস জোগাতে পুলিশের সামনে এনেছেন। “আমি চাইনি আর কেউ তার শিকার হোক। তাই পুলিশের সাহায্য নিয়েছি,” বলেন তিনি। তার এই পদক্ষেপে অন্তত একজন ভুক্তভোগী এগিয়ে এসেছেন, এবং পুলিশ অন্যদের খুঁজছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *