আইসক্রিমে ডিটারজেন্টের ছড়াছড়ি: স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে গ্রাহক

বেঙ্গালুরু, ২ এপ্রিল ২০২৫: গ্রীষ্মের তাপে আইসক্রিমের ঠান্ডা স্বাদ যখন স্বস্তি দেয়, তখন একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। কর্ণাটকের খাদ্য সুরক্ষা ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) প্রকাশ করেছে, স্থানীয় আইসক্রিম তৈরিতে ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক আবিষ্কার শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—সবার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
পরিদর্শনে চমকপ্রদ তথ্য
এফডিএ-র দুই দিনের অভিযানে ২২০টি আইসক্রিম, কোমল পানীয় ও আইস ক্যান্ডি উৎপাদন ইউনিট পরিদর্শন করা হয়। ফলাফল ভয়াবহ: ৯৭টি ইউনিটকে নোটিশ জারি এবং বাকিদের সংরক্ষণে গাফিলতির জন্য সতর্ক করা হয়েছে। এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আইসক্রিমের ক্রিমি গঠনের জন্য ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহার করা হচ্ছিল। কোমল পানীয়তে ফসফরিক অ্যাসিড মেশানো হচ্ছে, যা হাড়ের জন্য ক্ষতিকর।” এই অভিযানে ৩৮,০০০ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
কীভাবে বিপদ ঢুকছে?
তদন্তে দেখা গেছে, খরচ কমাতে অনেক ইউনিট সিন্থেটিক দুধ তৈরিতে ডিটারজেন্ট, ইউরিয়া ও স্টার্চ ব্যবহার করছে। প্রাকৃতিক চিনির বদলে স্যাকারিনের মতো ক্ষতিকর সংযোজন এবং অননুমোদিত রং মেশানো হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, “পরিষ্কার জলের বদলে দূষিত জল এবং অতিরিক্ত স্বাদযুক্ত এজেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব উপাদান অনুমোদিত সরবরাহকারীদের থেকে আনা হয় না।”
হোটেলেও অব্যবস্থা
এফডিএ ৫৯০টি রেস্তোরাঁ, মেস ও হোটেলও পরিদর্শন করেছে। ২১৪টি প্রতিষ্ঠানে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় ১,১৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেন, “অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যা গ্রাহকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।”
স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব
ডিটারজেন্ট ও ফসফরিক অ্যাসিডের মতো রাসায়নিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক। চিকিৎসকরা জানান, এগুলো পাকস্থলীর সমস্যা, হাড়ের ক্ষয় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরও গুরুতর। বেঙ্গালুরুর পুষ্টিবিদ ড. সুপ্রিয়া রাও বলেন, “এসব উপাদান শরীরে জমে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। গ্রাহকদের সচেতন হওয়া জরুরি।”
কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস
এফডিএ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা শিশুদের প্রিয় খাবারের গুণমান নিশ্চিত করতে এই অভিযান চালিয়েছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিভাগ ইতিমধ্যে নিম্নমানের পণ্য বাজেয়াপ্ত করেছে এবং লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।