ওয়াকফ বিলে মোদীকে সমর্থন নীতীশের, জেডিইউ-তে ফাটল

ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)। আজ লোকসভায় বিলটি পেশের আগে দলটি সাংসদদের জন্য হুইপ জারি করেছে, নির্দেশ দিয়ে ২-৪ এপ্রিল সংসদে উপস্থিত থেকে সরকারকে সমর্থন করতে। তবে, এই সিদ্ধান্ত দলের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে মুসলিম নেতাদের মধ্যে।
জেডিইউ-র অবস্থান
জেডিইউ-র প্রধান হুইপ সুনীল কুমারের জারি করা হুইপে বলা হয়েছে, “সকল সাংসদকে সংসদে উপস্থিত থেকে ওয়াকফ বিলে সরকারের পক্ষে ভোট দিতে হবে।” এই সিদ্ধান্ত বিহারে এই বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক তরঙ্গ তুলেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লল্লন সিং বলেন, “আমরা সংসদে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করব। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
দলের ভেতরে বিদ্রোহ
জেডিইউ-র মুসলিম নেতারা এই বিলের বিরোধিতায় সরব। এমএলসি গোলাম গাউস বলেন, “এই বিল মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকারে আঘাত। এটি প্রত্যাহার করা উচিত।” প্রাক্তন এমপি আহমেদ আশফাক করিমও একই সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবে, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিরোধ উপেক্ষা করে সমর্থনের পথে হেঁটেছে। রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় ঝা বলেন, “আমরা চাই না বিলটি পুরোনো প্রভাব নিয়ে বাস্তবায়িত হোক। সরকার আমাদের কথা বিবেচনা করেছে।”
অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক
বিল পেশের আগে লল্লন সিং ও সঞ্জয় ঝা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন। সূত্র জানায়, জেডিইউ-র কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে দলটি সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে। এই বৈঠকের পরই হুইপ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিরোধীদের ক্ষোভ
বিরোধী দল ও মুসলিম সংগঠনগুলো বিলটিকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে। AIMIM নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “জেডিইউ-র সমর্থন দুঃখজনক। নীতীশ কুমার মুসলিম ভোট হারাবেন।” বিহারে মুসলিম ভোটাররা জেডিইউ-র গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি, এবং এই সিদ্ধান্ত তাদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়াতে পারে।
বিশ্লেষণ: রাজনৈতিক জুয়া
জেডিইউ-র এই পদক্ষেপ নীতীশ কুমারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিহারে মুসলিম ভোটারদের সমর্থন হারানোর আশঙ্কা থাকলেও, NDA-র সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার কৌশল হিসেবে এটি দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অজয় সিনহা বলেন, “নীতীশ কেন্দ্রের সঙ্গে সমঝোতা বেছে নিয়েছেন, কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ বিভেদ এবং ভোটের ক্ষতি তাঁকে চাপে ফেলতে পারে।”