ওয়াকফ বিল: বিজেপির শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ?

ওয়াকফ বিল: বিজেপির শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ?

নয়াদিল্লি, ২ এপ্রিল ২০২৫: আজ লোকসভায় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫ পেশ হচ্ছে, যা চলমান বাজেট অধিবেশনের সবচেয়ে উত্তপ্ত বিষয় হয়ে উঠেছে। মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ বিরোধী দল ও মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সরকার দাবি করছে, এটি ওয়াকফ বোর্ডের আধুনিকীকরণের প্রয়াস, কিন্তু বিরোধীরা বলছে, এটি ধর্মীয় সম্পত্তির উপর আঘাত। এই বিল কি বিজেপির রাজনৈতিক শক্তি দেখানোর হাতিয়ার? এখানে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট।

সংসদে উত্তেজনা

বুধবার লোকসভায় বিলটি পেশের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র ২৯৩টি আসন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যথেষ্ট, যদিও বিজেপির নিজস্ব আসন ২৪০—সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৩২ কম। সরকারের দাবি, এই বিল পাসের মাধ্যমে তারা তাদের জোটের শক্তি ও প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করতে চায়। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “এটি ওয়াকফ ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে।”

বিরোধীদের ক্ষোভ

ইন্ডিয়া জোট বিলটিকে ‘সংবিধানবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছে। AIMIM নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত।” কংগ্রেসের গৌরব গগৈ অভিযোগ করেন, “সরকার তাড়াহুড়ো করে বিল পাস করতে চায়, আমাদের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে।” বিরোধীরা আরও সময় ও গভীর আলোচনার দাবি জানিয়েছে।

৮ ঘণ্টার আলোচনা

লোকসভার ব্যবসায়িক উপদেষ্টা কমিটি (BAC) ৮ ঘণ্টা বিতর্কে সম্মত হয়েছে। রিজিজু জানান, “প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হবে।” তবে, বৈঠকে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দল ওয়াকআউট করে, অভিযোগ করে যে তাদের ১২ ঘণ্টার দাবি উপেক্ষিত হয়েছে।

বিলের মূল বিষয়

গত আগস্টে পেশ করা এই বিলে ৪০টি সংশোধনী প্রস্তাবিত। এটি ওয়াকফ বোর্ডে মুসলিম নারী ও অমুসলিম প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা বলে। সরকারের দাবি, ২০০৬-এর সাচার কমিটির সুপারিশ অনুসারে এটি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করবে। তবে, বিরোধীরা বলছে, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

বিশ্লেষণ: শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ?

বিজেপি এই বিলের মাধ্যমে জোটের ঐক্য ও নিজেদের প্রভাব দেখাতে চায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি কেবল ওয়াকফ সংস্কার নয়, ২০২৪-এর নির্বাচনের পর শক্তি হ্রাসের সমালোচনার জবাব। তবে, বিরোধীদের প্রতিরোধ ও সম্প্রদায়ের উদ্বেগ এটিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

ওয়াকফ বিল: ১০টি বড় আপডেট

১. আজ পেশ: ২ এপ্রিল লোকসভায় বিলটি আলোচনা ও পাসের জন্য উঠছে।
২. ৪০টি সংশোধনী: ওয়াকফ আইনে বড় পরিবর্তন, নারী ও অমুসলিম প্রতিনিধিত্বসহ।
৩. সাচার কমিটি: ২০০৬-এর সুপারিশের ভিত্তিতে আধুনিকীকরণের দাবি।
৪. বিরোধীদের ক্ষোভ: ইন্ডিয়া জোট এটিকে সংবিধানবিরোধী বলছে।
৫. ওয়াকআউট: BAC বৈঠকে বিরোধীদের প্রতিবাদ।
৬. জেপিসি রিপোর্ট: যৌথ কমিটি সংশোধিত বিল পেশ করেছে।
৭. জেডিইউ-র সমর্থন: এনডিএ-র শরিক জেডিইউ বিলের পক্ষে।
৮. হুইপ জারি: বিজেপি ও কংগ্রেস সাংসদদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
৯. ঐক্যবদ্ধ বিরোধ: ইন্ডিয়া জোট সংসদে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি।
১০. নিরাপত্তা: দিল্লিতে বিক্ষোভের আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *