বিজেপির নতুন জাতীয় সভাপতি: রামনবমি আগে নাম ঘোষণার সম্ভাবনা, প্রতিযোগীদের মধ্যে শিবরাজ সবচেয়ে এগিয়ে

বিজেপির নতুন জাতীয় সভাপতি: রামনবমি আগে নাম ঘোষণার সম্ভাবনা, প্রতিযোগীদের মধ্যে শিবরাজ সবচেয়ে এগিয়ে

নতুন দিল্লি: ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের নতুন জাতীয় সভাপতির নাম শীঘ্রই ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বৃত্তে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আসন্ন রামনবমির আগে, অর্থাৎ এই মাসের মধ্যেই নতুন সভাপতির নাম প্রকাশ করা হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের মধ্যে নাগপুরে গত ৩০ মার্চ-এ হওয়া বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর থেকে এই প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী নাগপুর থেকে ফিরে এসে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে, যেমন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, রাজনাথ সিং এবং বিএল সন্তোষের সাথে রাজ্যগুলির সাংগঠনিক নির্বাচন ও সভাপতি নির্বাচন নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। সূত্রের দাবি, মোদী নাড্ডা এবং সন্তোষকে এই মাসেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি এখন পর্যন্ত ১৩টি রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পন্ন করেছে, কিন্তু জাতীয় সভাপতি নির্বাচনের জন্য অবশিষ্ট ১৯টি রাজ্যের নির্বাচন শীঘ্রই সম্পন্ন হবে।

জেপি নাড্ডা গত পাঁচ বছর ধরে বিজেপির জাতীয় সভাপতি পদে আছেন, এবং তাঁর উত্তরাধিকারী নির্বাচনের জন্য দলের নেতৃত্ব ব্যস্ত। সূত্রের খবর, বিজেপি শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গ সহ বাকি রাজ্যগুলির রাজ্য সভাপতিদের নাম ঘোষণা করবে, যা জাতীয় সভাপতি নির্বাচনের পথ সুগম করবে।

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কারা?

সভাপতি পদের জন্য শিবরাজ সিং চৌহান বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। চারবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং ছয়বার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া চৌহান বর্তমানে কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী। তিনি লাডলি বেহনা যোজনা-র মতো জনপ্রিয় কল্যাণমূলক পরিকল্পনার মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছেন। আরএসএস তাঁকে তাদের শীর্ষ পছন্দ হিসেবে বিবেচনা করছে। একজন দলীয় সূত্র বলেন, “শিবরাজের অভিজ্ঞতা এবং জনপ্রিয়তা তাঁকে এই পদের জন্য আদর্শ প্রার্থী করে তুলেছে।”

দ্বিতীয় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান, যিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং অমিত শাহের বিশ্বাসভাজন নেতা হিসেবে পরিচিত প্রধান, তবে তাঁর শ্রমিকদের সাথে কম যোগাযোগ এবং মিথস্ক্রিয়ার অভাব তাঁর বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্বলতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেন, “ধর্মেন্দ্র প্রধানের সংগঠনিক দক্ষতা অসামান্য, কিন্তু তিনি শ্রমিকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারেননি, যা সভাপতি পদের জন্য অত্যাবশ্যক।”

তৃতীয় প্রার্থী মনোহর লাল খট্টর, যিনি নগর ও আবাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন এবং পূর্বে নয় বছর হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে, অমিত শাহ তাঁর একগুঁয়ে মনোভাব এবং কর্মীদের সাথে কম যোগাযোগের কারণে তাঁর প্রতি সংশয় প্রকাশ করছেন। খট্টারের এই দুটি দুর্বলতা তাঁর প্রতিযোগিতার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া, দক্ষিণ ভারত থেকে সুনীল বনসাল, জি. কিষাণ রেড্ডি, বান্দি সঞ্জয় কুমার, ডি. পুরন্দেশ্বরী এবং বনথি শ্রীনিবাসনের নামও আলোচনায় রয়েছে। এই নেতারা দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক বিস্তারে বিজেপির ফোকাস বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *