পাকিস্তানের গুলি, ভারতের জবাব: নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই সেনা শহিদ!

পাকিস্তানের গুলি, ভারতের জবাব: নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই সেনা শহিদ!

নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) ফের উত্তেজনা। মঙ্গলবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরের কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিনা উস্কানিতে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক জবাব দেয়, ফলে দুই পাকিস্তানি সেনা নিহত। তবে এই সংঘর্ষে দুই ভারতীয় সেনাও শহিদ হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সীমান্তে টানাপড়েন অব্যাহত।

ঘটনার বিবরণ

মঙ্গলবার দুপুর ১:৩৫ নাগাদ পাকিস্তানি সেনারা পুঞ্চের কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে এলওসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের পর তারা ভারতীয় চৌকিতে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনার নঙ্গি টেকরি ব্যাটালিয়ন জোরালো পাল্টা হামলা চালায়। জম্মু-ভিত্তিক সেনা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুনীল বরতওয়াল বলেন, “আমাদের সেনারা কঠোর জবাব দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, তবে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।” গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের নিহত সেনারা হলেন চৌধুরী নাজাকাত আলী ও নাসির আহমেদ।

ভারতের ক্ষয়ক্ষতি

এই সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার দুই জওয়ান শহিদ হয়েছেন। তাদের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি আখনুরে আইইডি বিস্ফোরণে ক্যাপ্টেন করমজিৎ সিং বক্সী-সহ দুই সেনা নিহত হন। সেনা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের উস্কানি বাড়ায় গত তিন মাসে সীমান্তে ৫ জনের বেশি সেনা হারিয়েছে ভারত।

কাঠুয়ায় অভিযান

এদিকে, কাঠুয়ার পাঞ্জারথি এলাকায় জৈশ-ই-মোহাম্মদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। দুই সন্ত্রাসী নিহত হলেও তিনজন এখনও লুকিয়ে আছে। সেনার রাইজিং স্টার কোর জানিয়েছে, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে।”

পাকিস্তানের উস্কানি

২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, পাকিস্তান বারবার তা লঙ্ঘন করছে। জানুয়ারি থেকে এলওসি ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে উস্কানি বেড়েছে। ১২ মার্চ নওশেরায় স্নাইপার হামলায় এক সেনা আহত হন। ২১ ফেব্রুয়ারি পুঞ্চে ব্রিগেডিয়ার-স্তরের বৈঠকে ভারত হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, “শান্তি চাই, তবে প্রতিশোধের অধিকার রাখি।”

বিশ্লেষণ: কেন এই উত্তেজনা?

পাকিস্তানের এই কার্যকলাপের পেছনে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা কাজ করছে। সামরিক বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) রাজীব সিং বলেন, “পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।” গত বছর থেকে সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ ও গুলির ঘটনা ৩০% বেড়েছে। ভারতের কড়া জবাবে পাকিস্তানি সেনার মনোবল কমছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সেনার হুঁশিয়ারি

সেনা মুখপাত্র জানান, “আমরা ২০২১-এর চুক্তি মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু উস্কানি চললে কঠোর পদক্ষেপ নেব।” সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গুলি চলেছে। পাকিস্তানের আরও ক্ষয়ক্ষতির খবর এলেও নিশ্চিত তথ্য নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *