নয়াদিল্লি, ২ এপ্রিল ২০২৫: বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশের হাতে রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র, যা গ্রহের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সক্ষম। ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টস (FAS)-এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া ও আমেরিকা শীর্ষে থাকলেও ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান উপমহাদেশে উত্তেজনার কারণ। এই প্রতিবেদনে জানুন, কার কত অস্ত্র, আর শীর্ষ ১০-এ মুসলিম দেশ কতটা শক্তিশালী।

পারমাণবিক শক্তির তালিকা

1. রাশিয়া: ৫,৪৪৯টি অস্ত্র। ১৯৪৯-এ প্রথম পরীক্ষার পর বিশ্বের বৃহত্তম ভাণ্ডার গড়েছে।
2. আমেরিকা: ৫,২৭৭টি। ১৯৪৫-এ হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ব্যবহারের পর শক্তি বাড়িয়েছে।
3. চীন: ৬০০+। ১৯৬৪-এ প্রথম পরীক্ষা, এশিয়ার শীর্ষে।
4. ফ্রান্স: ২৯০টি। ১৯৬০-এ শুরু, ইউরোপের নেতা।
5. যুক্তরাজ্য: ২২৫টি। ১৯৫২-এ পরীক্ষা, ন্যাটোর মূল শক্তি।
6. ভারত: ১৮০টি। ১৯৭৪-এ ‘স্মাইলিং বুদ্ধ’ পরীক্ষা। ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতিতে অটল।
7. পাকিস্তান: ১৭০টি। ১৯৯৮-এ পরীক্ষা, ভারতের বিরুদ্ধে ভারসাম্যের লক্ষ্য।
8. ইসরায়েল: ৯০+। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই, ১৯৬০-এর দশকে ক্ষমতা অর্জন।
9. উত্তর কোরিয়া: ৫০+। ২০০৬-এ প্রথম পরীক্ষা, আক্রমণাত্মক নীতি।

ভারত-পাকিস্তান: সংখ্যা ও কৌশল

ভারতের ১৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকীকরণের মধ্যে রয়েছে। অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসর ৫,০০০ কিমি, যা চীনকেও লক্ষ্য করতে পারে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অজয় সিং বলেন, “ভারতের নীতি প্রতিরোধমূলক, তবে প্রতিশোধের ক্ষমতা অতুলনীয়।”
পাকিস্তানের ১৭০টি অস্ত্র ভারত-কেন্দ্রিক। তাদের বাবর-৩ ক্ষেপণাস্ত্র সমুদ্র থেকে ৪৫০ কিমি পর্যন্ত হানতে পারে। FAS-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান প্রতি বছর ৫-১০টি অস্ত্র বাড়াচ্ছে।

শীর্ষ ১০-এ মুসলিম দেশ

৯টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে একমাত্র পাকিস্তান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। ইসরায়েল, যদিও মধ্যপ্রাচ্যে, ইহুদি রাষ্ট্র। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সন্দেহের মধ্যে থাকলেও FAS তাদের তালিকায় রাখেনি। বিশ্লেষক রেহান খান বলেন, “পাকিস্তানই মুসলিম বিশ্বের পারমাণবিক প্রতিনিধি, তবে এটি ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ।”

বিশ্লেষণ: শক্তির ভারসাম্য

রাশিয়া ও আমেরিকার মিলিত ১০,৭২৬টি অস্ত্র বিশ্বের ৯০% পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। চীন দ্রুত বাড়ছে, যেখানে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ১০টি অস্ত্রের ব্যবধান উপমহাদেশে উত্তেজনা বাড়ায়। ভারতের ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ ও পাকিস্তানের ‘ফার্স্ট ইউজ’ নীতি দুই দেশের কৌশলগত পার্থক্য তুলে ধরে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ প্রিয়া শর্মা বলেন, “ভারত-পাকিস্তানের পারমাণবিক দ্বৈরথ বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি, তবে উভয়ের সংযম আশা জাগায়।”

ইতিহাসের পটভূমি

আমেরিকা ১৯৪৫-এ প্রথম বোমা ফেলে, রাশিয়া ১৯৪৯-এ পিছু নেয়। ভারত ১৯৭৪-এ ও পাকিস্তান ১৯৯৮-এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে। ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়ার গোপনীয়তা তালিকায় রহস্য যোগ করে। FAS জানায়, বিশ্বে মোট ১২,৫০০+ অস্ত্র রয়েছে, যার ২,০০০ প্রস্তুত অবস্থায়।