ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফায়ার স্টেশনে ঝুলছে এক অলৌকিক বাল্ব। ১৯০১ সাল থেকে একটানা জ্বলছে এই ‘শতবর্ষী আলো’, যা বিশ্বের দীর্ঘতম জ্বলন্ত বাল্ব হিসেবে স্বীকৃত। ১২৩ বছর পেরিয়েও এটি নিভেনি, ভাঙেনি বা ফিউজ হয়নি। আধুনিক বাল্ব যেখানে দু’বছর টেকে না, সেখানে এর দীর্ঘায়ু বিজ্ঞানীদেরও চমকে দিয়েছে। এর রহস্য কী, তা আজও অমীমাংসিত।

শতবর্ষী আলোর গল্প

লিভারমোরের ৬ নম্বর ফায়ার স্টেশনে এই বাল্বটি ঝুলছে। ১৯০১ সালে শেলবি ইলেকট্রিক কো ম্পা নি এটি তৈরি করে, আর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা প্রথম এটি জ্বালান। তখন থেকে এটি মাত্র ৪ ওয়াট শক্তিতে জ্বলছে। ফায়ার স্টেশনের প্রাক্তন কর্মী টম ব্রামেল বলেন, “এটি আমাদের গর্ব। বিদ্যুৎ বিভ্রাটেও এটি বন্ধ হয়নি।” বাল্বটি এখন কাচের বাক্সে রাখা, ওয়েবক্যামে নজরদারি চলে।

কীভাবে সম্ভব এই দীর্ঘায়ু?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পুরু কার্বন ফিলামেন্ট ও শক্ত কাচের নকশা এটিকে টেকসই করেছে। আধুনিক বাল্বের তুলনায় এটি কম তাপ উৎপন্ন করে, যা ফিলামেন্টের ক্ষয় কমায়। প্রযুক্তিবিদ রাহুল মেহতা বলেন, “১৯০০-এর দশকে টেকসই পণ্য তৈরি হত। আজকের বাল্ব ‘প্ল্যানড অবসোলেসেন্স’ নীতিতে তৈরি, যাতে দ্রুত নষ্ট হয়।” তবে, এর অবিশ্বাস্য স্থায়িত্বের পেছনের পূর্ণ রহস্য বিজ্ঞানীরা এখনও খুঁজে পাননি।

পর্যটকদের আকর্ষণ

‘সেন্টেনিয়াল লাইট’ এখন লিভারমোরের পরিচয়। প্রতি বছর হাজারো পর্যটক এটি দেখতে আসেন। ২০১৩ সালে একবার বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা হলে স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু মেরামতের পর আবার জ্বলে ওঠে। ফায়ার স্টেশনের বর্তমান প্রধান মাইকেল জোন্স বলেন, “এটি শুধু বাল্ব নয়, ইতিহাসের একটি জীবন্ত সাক্ষী।”