১২ লক্ষ কর্মচারীর ডিএ ২% বাড়ল, তবুও অসন্তোষ কেন?

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা তার কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য একটি নতুন উপহার ঘোষণা করেছেন। রাজ্য সরকার মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) ২% বৃদ্ধি করে এটি ৫৫% করেছে, যা ১ জানুয়ারী, ২০৫৫ থেকে কার্যকর হবে। এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৮ লক্ষ কর্মচারী ও ৪.৪০ লক্ষ পেনশনভোগী সরাসরি উপকৃত হবেন। তবে, কম বৃদ্ধির কারণে কর্মচারীরা খুশি নন, এবং তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
ডিএ বৃদ্ধির বিস্তারিত: কী বদল হলো?
রাজস্থান সরকার গত দুই বছরে মোট ১৭% ডিএ বৃদ্ধি করেছে। ২০৩৩-এর জানুয়ারিতে ডিএ ৩৮% ছিল, যা ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে:
- ২৫ মার্চ ২০৳৩: ৪% বৃদ্ধি, ৩৮% থেকে ৪২%।
- ৩০ অক্টোবর ২০৳৩: ৪% বৃদ্ধি, ৪২% থেকে ৪৬%।
- ১৪ মার্চ ২০৲৪: ৪% বৃদ্ধি, ৪৬% থেকে ৫০%।
- ২৪ অক্টোবর ২০৲৪: ৩% বৃদ্ধি, ৫০% থেকে ৫৩%।
- ১ এপ্রিল ২০৫৫: ২% বৃদ্ধি, ৵৩% থেকে ৵৫%।
এবারের ২% বৃদ্ধি গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম, যা কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। সরকারি কর্মচারীরা বছরে দুবার (জানুয়ারী ও জুলাই) ডিএ পান, যা মার্চ ও অক্টোবরে ঘোষণা করা হয়। বর্ধিত ডিএ বেতনের সাথে যোগ হয় এবং বকেয়া অর্থ জিপিএফ-এ জমা করা হয়।
কেন কর্মচারীরা খুশি নন?
কর্মচারীদের অসন্তোষের মূল কারণ এবারের ২% বৃদ্ধি, যা গত বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম। ২০৲৩-এ দুবার ৪% এবং ২৩৲৪-এ ৪% ও ৩% বৃদ্ধি পাওয়ার পর, এবারের কম বৃদ্ধি তাদের আশা ভঙ্গ করেছে। একজন কর্মচারী সংগঠনের নেতা বলেন, “২% বৃদ্ধি মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় অপর্যাপ্ত। আমরা আরও বেশি আশা করেছিলাম।” তিনি আরও জানান যে, জীবনযাত্রার খরচ বাড়ার মুখে এই বৃদ্ধি তাদের জন্য যথেষ্ট নয়।
কেন্দ্রের সাথে সমানতা: রাজস্থানের সিদ্ধান্ত
রাজস্থান সরকার তার কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মতোই ডিএ দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার ৫৫% ডিএ-এ ২% বৃদ্ধি করেছে, যা রাজস্থানও অনুসরণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেন, “বিক্রম সংবৎ ২০৮ূ এবং ৲৫-৬ অর্থবর্ষের শুরুতে ২% ডিএ বৃদ্ধি অনুমোদিত হয়েছে, যা ১২ লক্ষ কর্মচারী ও পেনশনভোগীকে সুবিধা দেবে।” তিনি এই সিদ্ধান্তকে রাজ্যের কর্মচারীদের জন্য “স্বস্তি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তবে, কর্মচারীদের মধ্যে একটি প্রশ্ন উঠেছে: কেন এত কম বৃদ্ধি? তাদের মতে, মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার খরচের তুলনায় এই ২% বৃদ্ধি অপর্যাপ্ত। একজন পেনশনভোগী বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম কমপক্ষে ৩-৪% বৃদ্ধি হবে। ২% দিয়ে আমাদের দিনযাপন কঠিন হবে।”
সরকারি সিদ্ধান্তের পেছনে কী?
রাজস্থান সরকারের এই সিদ্ধান্তের পেছনে আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা একটি বড় কারণ। একজন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ বলেন, “রাজ্যের আর্থিক চাপের কারণে সরকার কম বৃদ্ধি দিয়েছে। তবে, এটি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে, যা ভবিষ্যতে শ্রম সমস্যা নিয়ে আসতে পারে।” অন্যদিকে, সরকারের দাবি হলো, কেন্দ্রের সাথে সমানতা রক্ষা করা ও কর্মচারীদের কল্যাণ নিশ্চিত করা তাদের প্রধান লক্ষ্য।