সিরাজের আবেগে ভরা প্রত্যাবর্তন: কোহলির সামনে থমকে দাঁড়ালেন, ভাইরাল মুহূর্ত

সিরাজের আবেগে ভরা প্রত্যাবর্তন: কোহলির সামনে থমকে দাঁড়ালেন, ভাইরাল মুহূর্ত

আইপিএল ২০২৫-এর ১৪তম ম্যাচে এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) এবং গুজরাট টাইটান্সের (জিটি) মধ্যে একটি নাটকীয় লড়াই দেখা গেল। ম্যাচের শুরুতেই সবার নজর কেড়ে নেন মোহাম্মদ সিরাজ, যিনি তার পুরনো দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে আবেগে ভরে যান। বিরাট কোহলির মুখোমুখি হওয়ার আগে তিনি দৌড়ের মাঝপথে থেমে যান—এই মুহূর্তটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।

ম্যাচের শুরু: টস থেকে আবেগের ঢেউ

গুজরাটের অধিনায়ক শুভমান গিল টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “এটি ভালো উইকেট মনে হচ্ছে। পরিস্থিতি খুব বদলাবে না, তাই আমরা চেজ করতে চাই।” অন্যদিকে, আরসিবি অধিনায়ক রজত পতিদার জানান, তিনিও বোলিং পছন্দ করতেন। ম্যাচ শুরু হতেই আরসিবির হয়ে ওপেন করতে নামেন বিরাট কোহলি ও ফিল সল্ট। গুজরাটের প্রথম ওভারে বল হাতে তুলে নেন সিরাজ, যিনি ৭ বছর আরসিবির লাল-নীল জার্সিতে খেলেছেন।

প্রথম বলে সল্ট এক রান নেন, এবং দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইকে আসেন কোহলি। সিরাজ দৌড় শুরু করেন, কিন্তু হঠাৎ মাঝপথে থেমে যান। তার চোখে আবেগের ঝড়, মুখে স্মৃতির ছায়া। এই দৃশ্য দেখে গিলও হাসি চাপতে পারেননি। সিরাজ ফিরে গিয়ে আবার দৌড় শুরু করেন, এবং প্রথম বলেই কোহলি একটি দুর্দান্ত চার হাঁকান। চিন্নাস্বামীর দর্শকরা উল্লাসে ফেটে পড়ে, কিন্তু সিরাজের মুখে ফুটে ওঠে এক মিশ্র অনুভূতি।

সিরাজের আবেগ: ৭ বছরের বন্ধন

সিরাজের এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে গভীর কারণ। ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আরসিবির হয়ে ৮৭ ম্যাচে ৮৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। কোহলির নেতৃত্বে তার ক্যারিয়ার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সিরাজ একবার বলেছিলেন, “বিরাট ভাই আমাকে খারাপ সময়ে সমর্থন করেছেন। ২০১৮-১৯ সালে আমার পারফরম্যান্স ভালো না হলেও তিনি আমাকে ধরে রেখেছিলেন।” আইপিএল ২০২৫ নিলামে আরসিবি তাকে ধরে না রাখায় গুজরাট তাকে ১২.২৫ কোটি টাকায় কিনে নেয়। কোহলির বিপক্ষে বল করার এই মুহূর্তটি তার জন্য শুধু খেলা নয়, একটি আবেগময় স্মৃতির প্রতিফলন।

ম্যাচের গতিপথ: সিরাজের প্রতিশোধ

আবেগ সামলে সিরাজ দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফিরে আসেন। তিনি পাওয়ারপ্লেতে দেবদত্ত পাডিক্কল ও ফিল সল্টকে আউট করেন। পরে লিয়াম লিভিংস্টোনের (৫৪) বিধ্বংসী ইনিংসও তিনি শেষ করেন, ৪ ওভারে ৩/১৯ রান দিয়ে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন। আরসিবি ২০ ওভারে ১৬৯/৮ করে। জবাবে, জস বাটলারের অপরাজিত ৭৩ এবং সাই সুদর্শনের ৪৯ রানে গুজরাট ১৭.৫ ওভারে ৮ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয়।

সিরাজ ম্যাচ শেষে বলেন, “৭ বছর এখানে খেলেছি, তাই আবেগ ছিল। কিন্তু বল হাতে নেওয়ার পর সব ভুলে গিয়েছিলাম। আমি রোনাল্ডোর ভক্ত, তাই সেলিব্রেশনটা ওরকম।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *