UPI ফের ডাউন: PhonePe-GPay-তে পেমেন্ট ব্যর্থ, ব্যবহারকারীরা হতাশ

UPI ফের ডাউন: PhonePe-GPay-তে পেমেন্ট ব্যর্থ, ব্যবহারকারীরা  হতাশ

ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস (UPI) সিস্টেমে আবারও বড় ধরনের বিভ্রাট দেখা দিয়েছে, যার জেরে PhonePe, Google Pay (GPay), Paytm ও SBI-এর মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে লেনদেন ব্যর্থ হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বারের ঘটনা। ডাউনডিটেক্টরের তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭:৪০-এ বিভ্রাটের অভিযোগ ৫৩৩-এ পৌঁছেছে, যা দিনভর ক্রমশ বেড়েছে। দৈনন্দিন লেনদেনে UPI-এর ওপর নির্ভরশীল লাখো ব্যবহারকারী এতে বিপাকে পড়েছেন।

বিভ্রাটের চিত্র: কী হচ্ছে?

ডাউনডিটেক্টর জানায়, দুপুর ১:০০ থেকে বিকেল ৫:০০ পর্যন্ত অভিযোগের সংখ্যা বাড়তে থাকে, সন্ধ্যায় তা শীর্ষে পৌঁছায়। UPI-তে ৬৪% সমস্যা তহবিল স্থানান্তরে, ২৮% অর্থপ্রদানে এবং ৮% অ্যাপ কার্যকারিতায়। SBI-তে ৫৭% ব্যবহারকারী তহবিল স্থানান্তরে ব্যর্থতা, ৩৪% মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এবং ৯% ব্যালেন্স আপডেটে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “GPay-তে টাকা কাটল, কিন্তু দোকানদারের কাছে পৌঁছাল না। এটা কী হচ্ছে?” আরেকজন বলেন, “PhonePe ক্র্যাশ করছে, রিফান্ডও আটকে আছে।”

কারণ এখনও অজানা

ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (NPCI) বা ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাপগুলো এখনও বিভ্রাটের কারণ স্পষ্ট করেনি। প্রাথমিকভাবে কারিগরি ত্রুটির কথা বলা হচ্ছে। কিছু ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, লেনদেন ব্যর্থ হওয়ার পর ‘ভারতে UPI ডাউন’ বার্তা দেখে টাকা ফেরত এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সার্ভার ওভারলোড বা রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা হতে পারে। তবে, সাইবার নিরাপত্তার প্রশ্নও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। NPCI-এর একটি সূত্র জানায়, “আমরা তদন্ত করছি। শিগগিরই সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

প্রভাব: দৈনন্দিন জীবনে ধাক্কা

ভারতে UPI দৈনিক ৫০ কোটির বেশি লেনদেন পরিচালনা করে, যার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা। দোকানদার থেকে অফিসযাত্রী—সবাই এর ওপর নির্ভরশীল। দিল্লির এক দোকানদার রমেশ কুমার বলেন, “বিকেল থেকে UPI কাজ করছে না। নগদ না থাকলে কী করব?” মুম্বইয়ের এক কর্মজীবী, প্রিয়া শর্মা, জানান, “ট্যাক্সির ভাড়া দিতে পারিনি। বিকল্প রাখতেই হবে।” এই ঘটনা ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধার পাশাপাশি এর দুর্বলতাও তুলে ধরেছে।

অতীতের ছায়া

গত সপ্তাহে একই ধরনের বিভ্রাটে হাজার হাজার ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। ২০২৪-এর ডিসেম্বরেও UPI সার্ভার ডাউন হয়েছিল, যখন NPCI সার্ভার আপগ্রেডের কথা জানিয়েছিল। ঘন ঘন এই সমস্যা প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ফিনটেক বিশেষজ্ঞ অরুণ সিং বলেন, “UPI-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, কিন্তু সার্ভার ক্ষমতা সেই গতিতে বাড়ছে না। এটি একটি সতর্কতা।”

বিশ্লেষণ: চ্যালেঞ্জ ও সমাধান

UPI ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতির মেরুদণ্ড। ২০১৬-এ চালু হওয়ার পর এটি নগদ-নির্ভরতা কমিয়েছে। কিন্তু ঘন ঘন বিভ্রাট ব্যবহারকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, NPCI-কে সার্ভার ব্যাকআপ বাড়াতে হবে এবং রিয়েল-টাইম মনিটরিং জোরদার করতে হবে। বিকল্প হিসেবে নেট ব্যাংকিং বা কার্ড পেমেন্টের প্রচারও জরুরি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *