গুজরাটের জামনগরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে এক পাইলট নিহত হয়েছেন। বুধবার রাতে সুয়ারদা গ্রামের কাছে একটি খোলা মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়, যার ফলে এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর উদ্ধারকারী দল দ্রুত পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার বিবরণ

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বিমানটি আকাশে থাকাকালীন হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে। বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানের ধ্বংসাবশেষ দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আহত পাইলট মাটিতে পড়ে আছেন এবং স্থানীয়রা তাকে ঘিরে ভিড় করছেন। উদ্ধারের পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জামনগরের কালেক্টর কেতন ঠক্কর বলেন, “একজন পাইলটকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বিমান বাহিনী, পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে কাজ করেছে। সৌভাগ্যবশত, বেসামরিক এলাকায় কোনো ক্ষতি হয়নি।” তিনি আরও জানান, বিমানটি একটি প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের অংশ হিসেবে জামনগর বিমানঘাঁটি থেকে রওনা হয়েছিল।

তদন্ত শুরু

বিমান বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা সিস্টেম ব্যর্থতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিমান বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা, এবং আমরা পাইলটের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”

পূর্বের ঘটনার প্রেক্ষাপট

এটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমানের প্রথম দুর্ঘটনা নয়। গত মাসে হরিয়ানার পঞ্চকুলার কাছে একটি জাগুয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেবার পাইলট দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে জনবসতি থেকে দূরে নিয়ে যান, ফলে বড় ক্ষতি এড়ানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাগুয়ারের মতো পুরোনো প্রযুক্তির বিমানে ঘন ঘন ত্রুটি দেখা দিচ্ছে, যা আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়।

বিশ্লেষণ: অটো খাতের ওপর প্রভাব

ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক ভারতীয় অটোমোবাইল খাতে বড় ধাক্কা হলেও, এই দুর্ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সরাসরি যোগ নেই। তবে, বিমান বাহিনীর সরঞ্জামের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনীতিবিদ রাকেশ শর্মা বলেন, “সামরিক সরঞ্জামে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। পুরোনো প্রযুক্তি শুধু ক্ষতিই ডেকে আনে।” এই ঘটনা প্রতিরক্ষা বাজেটে নতুন বরাদ্দের দাবি জোরালো করতে পারে।

পরিস্থিতি এখন কী?

পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থল পরিষ্কার করেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে, দ্রুত উদ্ধারকাজে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। বিমান বাহিনী এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে।