“ট্রাম্পের শুল্ক-খেলা: ৭৫ দেশকে ছাড়, চীনের ওপর ১২৫% ধাক্কা!”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন মোড় আনলেন। বুধবার (৯ এপ্রিল) তিনি ৭৫টির বেশি দেশের জন্য ৯০ দিনের শুল্ক ছাড় ঘোষণা করেছেন, যেখানে পারস্পরিক শুল্ক কমিয়ে ১০% করা হয়েছে। তবে, চীনের জন্য বড় ধাক্কা—তাৎক্ষণিকভাবে ১২৫% শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই ঘোষণায় বিশ্ব বাজারে হৈচৈ পড়ে গেছে। কী এর পেছনের কারণ এবং প্রভাব? আসুন দেখি।
চীনের ওপর শুল্ক-হাতুড়ি
ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ-এ লিখেছেন, “চীন বিশ্ব বাজারের প্রতি সম্মান দেখায়নি। তাই আমি চীনের ওপর শুল্ক ১২৫%-এ বাড়াচ্ছি, যা এখনই কার্যকর।” তিনি যোগ করেন, “চীনকে বুঝতে হবে, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশকে লুটপাটের দিন শেষ।” এর আগে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) চীনের পণ্যে ১০৪% শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা। জবাবে চীন বুধবার আমেরিকান পণ্যে ৮৪% শুল্ক বসিয়েছে, যা আজ (১০ এপ্রিল) থেকে কার্যকর। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১২টি মার্কিন কো ম্পা নিকেও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করেছে। এই শুল্ক-প্রতিশুল্কের লড়াই দুই পরাশক্তির বাণিজ্য যুদ্ধকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
৭৫ দেশের জন্য স্বস্তি
ট্রাম্পের ঘোষণায় চীন ছাড়া ৭৫টির বেশি দেশের জন্য শুল্ক স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এই দেশগুলো আমাদের বাণিজ্য বিভাগ, ট্রেজারি ও ইউএসটিআর-এর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। তাই ৯০ দিনের জন্য তাদের ওপর ১০% পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর থাকবে।” এর মধ্যে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটি আমাদের রপ্তানি খাতের জন্য স্বস্তির খবর।” তবে, এই ছাড় কতদিন টিকবে, তা নির্ভর করছে আলোচনার ফলাফলের ওপর।
বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব
ট্রাম্পের ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ার বাজারে বড় উত্থান দেখা গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৯%-এর বেশি বেড়েছে। তবে, চীনের সঙ্গে উত্তেজনা অর্থনীতিবিদদের উদ্বিগ্ন করেছে। “চীন সম্ভবত পিছু হটবে না। এই যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ক্ষতি করতে পারে,” বলেন অর্থনীতিবিদ রাহুল চৌধুরী। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই সংঘাতে আমেরিকা-চীনের পণ্য বাণিজ্য ৮০% পর্যন্ত কমতে পারে, যার মূল্য ৪৬৬ বিলিয়ন ডলার।
কেন এই পদক্ষেপ?
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশল রয়েছে। তিনি বলেন, “যেসব দেশ প্রতিশোধ নেয়নি, তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। কিন্তু চীন প্রতিশোধ নিয়েছে, তাই তাদের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।” মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানান, “এটি ট্রাম্পের আলোচনার কৌশল। তিনি চীনকে চাপে রেখে অন্য দেশগুলোকে কাছে টানতে চান।” তবে, বিরোধীরা বলছেন, এটি বাজারের অস্থিরতার চাপে পিছু হটার ফল।