“ডায়াবেটিসে কিডনি বাঁচান: এই ৫ টিপস মনে রাখুন!”

“ডায়াবেটিসে কিডনি বাঁচান: এই ৫ টিপস মনে রাখুন!”

ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করা বাড়ায় না, এটি কিডনির ‘নীরব ঘাতক’। উচ্চ রক্তে শর্করা ধীরে ধীরে কিডনির ক্ষতি করে, যা ‘ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি’ নামে পরিচিত। সময়মতো সতর্ক না হলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে, সঠিক যত্নে এই বিপদ এড়ানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫টি সহজ পদক্ষেপ ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। কী করবেন? জানুন বিস্তারিত।

১. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন

উচ্চ শর্করা কিডনির ছোট রক্তনালীগুলোকে ধ্বংস করে। “রক্তে শর্করা বেশি থাকলে কিডনি ফিল্টার করার ক্ষমতা হারায়,” বলেন নেফ্রোলজিস্ট ড. অমিত গুপ্তা। তিনি পরামর্শ দেন:

  • নিয়মিত HbA1c পরীক্ষা করুন, লক্ষ্য রাখুন ৭%-এর নিচে।
  • ডাক্তারের নির্দেশে ওষুধ বা ইনসুলিন নিন।
  • মিষ্টি ও কার্বোহাইড্রেট বেশি খাবার (চিনি, ভাত) এড়ান। ২০২৪-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিডনি ক্ষতির ঝুঁকি ৩০% কমে।

২. রক্তচাপের যত্ন নিন

উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিসে এটি সাধারণ সমস্যা। ড. গুপ্তা বলেন, “১৩০/৮০ মিমিএইচজির ওপরে রক্তচাপ থাকলে কিডনি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” যা করবেন:

  • দৈনিক লবণ ৫ গ্রামের নিচে রাখুন।
  • যোগব্যায়াম বা ধ্যানে মানসিক চাপ কমান।
  • নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন। ভারতের ৪০% ডায়াবেটিস রোগীর উচ্চ রক্তচাপ থাকে, যা কিডনি সমস্যার অন্যতম কারণ।

৩. পর্যাপ্ত জল পান করুন

কিডনি শরীরের বর্জ্য ফিল্টার করে। জলের অভাবে এই কাজ ব্যাহত হয়। “দিনে ৮-১০ গ্লাস জল পান করলে কিডনি বিষমুক্ত থাকে,” বলেন ডায়েটিশিয়ান রিনা সিং। তিনি যোগ করেন:

  • অ্যালকোহল ও ঠান্ডা পানীয় এড়ান, এগুলো জলশূন্যতা বাড়ায়।
  • হালকা গরম জল কিডনির জন্য উপকারী। গবেষণা বলছে, পর্যাপ্ত হাইড্রেশন কিডনি ফাংশন ২০% ভালো রাখে।

৪. কিডনি-বান্ধব খাবার খান

খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কিডনি সুস্থ রাখার মূল চাবি। “অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির ওপর চাপ দেয়,” জানান রিনা সিং। তিনি পরামর্শ দেন:

  • মাছ বা মুরগির মতো প্রোটিন সীমিত রাখুন।
  • পটাশিয়াম ও ফসফরাস বেশি খাবার (কলা, আলু) কম খান।
  • ফাইবারযুক্ত খাবার (ওটস, শাকসবজি) বেছে নিন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যে কিডনি ক্ষতি ২৫% কমে।

৫. নিয়মিত চেকআপ করান

কিডনির সমস্যা প্রথমে লক্ষণ দেখায় না। “বছরে দুবার কিডনি ফাংশন টেস্ট (KFT) জরুরি,” বলেন ড. গুপ্তা। তিনি যোগ করেন:

  • প্রস্রাবে মাইক্রোঅ্যালবুমিন পরীক্ষা ক্ষতি ধরতে সাহায্য করে।
  • ব্যথানাশক ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। ভারতে ৩৫% ডায়াবেটিস রোগী কিডনি সমস্যায় ভোগেন, যা নিয়মিত পরীক্ষায় আগে ধরা পড়তে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *