“SBI-এর নতুন এটিএম নিয়ম: ফ্রি লেনদেন কমল, চার্জ বাড়ল!”

দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI) গ্রাহকদের জন্য এটিএম লেনদেনের নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর এই নতুন নীতিতে বিনামূল্যে লেনদেনের সীমা সংশোধন করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত লেনদেনে চার্জ বাড়ানো হয়েছে। এসবিআই বলছে, এই পরিবর্তন ফি কাঠামো সরল করতে এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংকে উৎসাহিত করতে করা হয়েছে। তবে, এটি কীভাবে গ্রাহকদের প্রভাবিত করবে? আসুন জেনে নিই।
নতুন নিয়মে কী বদলেছে?
এসবিআই-এর নতুন নীতি অনুযায়ী, সব সঞ্চয়ী হিসাবধারী এখন থেকে প্রতি মাসে এসবিআই এটিএম-এ ৫টি এবং অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ ১০টি বিনামূল্যে লেনদেন করতে পারবেন। আগে গড় মাসিক ব্যালেন্স (AMB) ও অঞ্চলভেদে এই সীমা ভিন্ন ছিল। এখন সবার জন্য একই নিয়ম। তবে, ব্যালেন্সের ওপর নির্ভর করে কিছু ব্যতিক্রম আছে:
- ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা AMB: অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ ৫টি ফ্রি লেনদেন।
- ৫০,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা AMB: একই সুবিধা, অর্থাৎ ৫টি ফ্রি লেনদেন।
- ১ লাখ টাকার বেশি AMB: এসবিআই ও অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ সীমাহীন বিনামূল্যে লেনদেন।
“এটি গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা সরল করার পদক্ষেপ,” জানিয়েছে এসবিআই-এর এক মুখপাত্র।
অতিরিক্ত লেনদেনে কত চার্জ?
বিনামূল্যে সীমা ছাড়ালে চার্জ ধার্য হবে। এসবিআই এটিএম-এ প্রতি লেনদেনে ১৫ টাকা + জিএসটি এবং অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ ২১ টাকা + জিএসটি দিতে হবে। এই চার্জ মেট্রো ও নন-মেট্রো—সব জায়গায় সমান। “আমরা ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে চাই,” বলেন ব্যাংকের এক আধিকারিক। তবে, এটি কি সাধারণ গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলবে?
অ-আর্থিক লেনদেনের নিয়ম
ব্যালেন্স চেক বা মিনি স্টেটমেন্টের মতো অ-আর্থিক লেনদেন এসবিআই এটিএম-এ বিনামূল্যে থাকবে, সীমা ছাড়ালেও। কিন্তু অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ এর জন্য ১০ টাকা + জিএসটি চার্জ লাগবে। নগদহীন আর্থিক লেনদেন, যেমন ট্রাস্টে দান, এসবিআই এটিএম-এ বিনামূল্যে, তবে অন্য ব্যাংকের এটিএম-এ এই সুবিধা নেই।
ব্যর্থ লেনদেনের জরিমানা
অপর্যাপ্ত ব্যালেন্সের কারণে লেনদেন ব্যর্থ হলে ২০ টাকা + জিএসটি জরিমানা অপরিবর্তিত আছে। এছাড়া, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) ১ মে ২০২৫ থেকে এটিএম ফি ২১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে, এসবিআই গ্রাহকদের ভবিষ্যতে আরও বেশি খরচ গুনতে হতে পারে।
বিশ্লেষণ: কেন এই পরিবর্তন?
এসবিআই-এর এই পদক্ষেপের পিছনে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত কারণ রয়েছে। ব্যাংকটি গত ৫ বছরে এটিএম লেনদেন থেকে ২,০৪৩ কোটি টাকা আয় করেছে, যখন অন্য সরকারি ব্যাংকগুলো ৩,৭৩৯ কোটি টাকা লোকসানে রয়েছে। “এটিএম রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাড়ছে। ফি বাড়িয়ে আমরা সেই চাপ কমাতে চাই,” জানান এক ব্যাংক বিশ্লেষক। তবে, এটি গ্রাহকদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ঠেলে দিতে পারে, যা সরকারের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
গ্রাহকদের জন্য পরামর্শ
- বিনামূল্যে সীমার মধ্যে থাকতে লেনদেন পরিকল্পনা করুন।
- UPI বা নেট ব্যাংকিং ব্যবহার বাড়ান, যেখানে কোনও চার্জ নেই।
- নিয়মিত ব্যালেন্স চেক করে ব্যর্থ লেনদেন এড়ান।