“ট্রাম্পের শুল্কে ইউ-টার্ন: ভারতের প্রশংসা, চীনের ওপর ১২৫% চাপ!”

“ট্রাম্পের শুল্কে ইউ-টার্ন: ভারতের প্রশংসা, চীনের ওপর ১২৫% চাপ!”

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছেন। ৯০ দিনের জন্য ভারত সহ ৭৫টি দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক স্থগিত করেছেন তিনি। তবে চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে শুল্ক ১০৪% থেকে বাড়িয়ে ১২৫% করেছেন। এর পেছনে কারণ হিসেবে ট্রাম্প বলেছেন, “চীন বিশ্ব বাজারের প্রতি সম্মান দেখায়নি।” এদিকে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্ট ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, “ভারত আমাদের সঙ্গে আলোচনায় এগিয়ে আছে।” কেন এই হঠাৎ পরিবর্তন? আসুন বিশ্লেষণ করি।

শুল্কে ইউ-টার্ন: কী ঘটল?

গত সপ্তাহে ট্রাম্প সব আমদানি পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক এবং কিছু দেশের জন্য উচ্চতর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করেছিলেন। এরপর চীন ৮৪% পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। বুধবার (৯ এপ্রিল) ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “৭৫টির বেশি দেশ আমাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এগিয়ে এসেছে। তাই ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করছি, তবে চীনের ওপর ১২৫% শুল্ক কার্যকর হচ্ছে।” তিনি যোগ করেন, “চীনকে বুঝতে হবে, আমেরিকাকে শোষণের দিন শেষ।” এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব বাজারে স্বস্তি ফিরেছে, S&P 500 সূচক ৯.৫% বেড়েছে।

ভারতের প্রশংসা কেন?

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্ট হোয়াইট হাউসে বলেন, “ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনায় এগিয়ে এসেছে। এরা চীনের প্রতিবেশী, এবং আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে চাই।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যারা আলোচনায় আসবে, তাদের জন্য শুল্ক ১০%-এ নামিয়ে আনা হবে।” ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি আমেরিকার সঙ্গে ৫০ বিলিয়ন ডলার, যা চীনের ৩২০ বিলিয়নের তুলনায় অনেক কম। এটি ভারতকে আলোচনায় শক্ত অবস্থান দেয়।

চীনের ওপর চাপ বাড়ছে

চীনের ৮৪% পাল্টা শুল্কের জবাবে ট্রাম্প ১২৫% শুল্ক আরোপ করেছেন। বেস্যান্ট বলেন, “চীন বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করছে। এই শুল্ক তাদের প্রতি সতর্কবার্তা।” চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব।” বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) সতর্ক করে বলেছে, এই শুল্ক যুদ্ধে আমেরিকা-চীন বাণিজ্য ৮০% কমে যেতে পারে, যা ৪৬৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি ডেকে আনবে।

কেন ট্রাম্প পিছু হটলেন?

ট্রাম্পের প্রাথমিক শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। S&P 500 গত ৪ দিনে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্য হারায়। ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, “মানুষ একটু ভয় পাচ্ছিল।” বেস্যান্ট অবশ্য বলেন, “এটি ট্রাম্পের পরিকল্পনার অংশ ছিল। তিনি চীনকে চাপে ফেলেছেন।” বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ৭৫টি দেশের আলোচনার প্রস্তাব ও বাজারের চাপ ট্রাম্পকে এই সিদ্ধান্তে বাধ্য করেছে। তবে, ১০% বেসলাইন শুল্ক সব দেশের জন্য বহাল রয়েছে।

ভারতের জন্য সুযোগ

ভারতের জন্য এটি একটি স্বস্তি। আগে ২৭% শুল্কের হুমকি ছিল, এখন তা ১০%-এ নেমেছে। একজন ভারতীয় কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “এটি আমাদের রপ্তানিকারীদের জন্য স্বস্তি, বিশেষ করে চিংড়ি ব্যবসায়ীদের।” ভারত এখন আমেরিকার সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগোচ্ছে। তবে, ইলেকট্রনিক্স ও অটো যন্ত্রাংশের মতো খাতে প্রভাব পড়তে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *