“টিকিটবিহীন মহিলার হুমকি: সেকেন্ড এসিতে উত্তেজনা!”

“টিকিটবিহীন মহিলার হুমকি: সেকেন্ড এসিতে উত্তেজনা!”

বিদর্ভ সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের সেকেন্ড এসি কোচে টিকিটবিহীন এক মহিলার দুর্ব্যবহার ও হুমকি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) টিকিট চাইতেই মহিলা গালিগালাজ শুরু করেন এবং বলেন, “আমি এটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেব।” ঘটনাটি আকোলা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছলে রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) হস্তক্ষেপ করে মামলা দায়ের করেছে। “এটি শুধু নিয়ম লঙ্ঘন নয়, নিরাপত্তার প্রশ্নও,” বলেন রেলওয়ে কর্মকর্তা অমিত শেঠ। কী ঘটেছিল এবং এর পেছনে কী আছে? আসুন বিশ্লেষণ করি।

ঘটনার বিবরণ

বিদর্ভ সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে যাত্রার সময় বোরকা পরা ওই মহিলা সেকেন্ড এসি কোচে টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ করছিলেন। টিটিই টিকিট দেখতে চাইলে তিনি গালিগালাজের পাশাপাশি হুমকি দেন, “টুকরো টুকরো করে ফেলে দেব।” টিটিই তৎক্ষণাৎ আরপিএফকে জানান। আকোলা স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে মহিলা নামেন, কিন্তু সেখানেও তিনি রেল কর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ চালিয়ে যান। “ম্যাডাম, টিকিট দেখান, এটা আপনার বার্থ নয়,” বলে আরপিএফ কর্মী তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। জবাবে মহিলা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা করো আমি কে!”

আরপিএফের পদক্ষেপ

মহিলার আচরণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরপিএফ একজন মহিলা কনস্টেবলকে ডাকে। তদন্তের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। “আমরা আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এটি যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়,” জানান আকোলা আরপিএফের এক কর্মকর্তা। ভিডিওতে ঘটনাটি ধরা পড়ায় তদন্তে গতি এসেছে।

যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া

ট্রেনের অন্য যাত্রীরা এই ঘটনায় হতবাক। “এসি কোচে এমন আচরণ কল্পনার বাইরে। আমরা বেশি ভাড়া দিয়েও নিরাপত্তা পাচ্ছি না,” বলেন যাত্রী রাকেশ শর্মা। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় আলোচনা তুঙ্গে। একজন লিখেছেন, “রেলের নিরাপত্তা এখন রসিকতা!”

বিশ্লেষণ: কেন এমন ঘটনা?

ভারতীয় রেলে টিকিটবিহীন যাত্রীদের সমস্যা নতুন নয়। ২০২২-২৩ সালে ৩.৬ কোটি যাত্রী ভুল টিকিট বা টিকিট ছাড়া ধরা পড়েছেন বলে রেলের তথ্য। “এসি কোচে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে টিটিই ও আরপিএফের উপস্থিতি বাড়ানো দরকার,” বলেন রেল বিশেষজ্ঞ সুধীর গুপ্তা। এই ঘটনা নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার ঘাটতি তুলে ধরেছে। মহিলার আচরণ আইনি শাস্তিযোগ্য—রেল আইনে এসি কোচে টিকিটবিহীন ভ্রমণে এক বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

রেলের চ্যালেঞ্জ

এই ঘটনা রেলের দুটি সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে—টিকিট চেকিংয়ে কড়াকড়ি ও কোচে নজরদারির অভাব। “দরজায় টিকিট স্ক্যানিং বা গার্ড থাকলে এমনটা হতো না,” বলেন গুপ্তা। যাত্রীদের মতে, বেশি ভাড়ার সঙ্গে সুরক্ষার নিশ্চয়তাও চাই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *