ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশ্বকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আমেরিকার শীর্ষ গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি (আইএসআইএস) জানিয়েছে, ইরান এখন পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহ দূরে। এই প্রকাশ এমন সময়ে এলো, যখন ১২ এপ্রিল ওমানে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা। এই প্রতিবেদন আলোচনার টেবিলে নতুন উত্তেজনা যোগ করতে পারে, কারণ ইরান দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু এই রিপোর্ট তেহরানের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহের ছায়া ফেলেছে।

আইএসআইএস-এর গাইগার কাউন্টার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উন্নত সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তি ও গোপন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সাইটের সম্ভাবনা এই উদ্বেগকে আরও গভীর করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ, ইরানের পারমাণবিক হুমকির স্কোর ১৮০-এর মধ্যে ১৫৭-এ পৌঁছেছে, যা গত বছর ছিল ১৫১। এর অর্থ, ইরান এখন অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম তৈরির কাছাকাছি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা কমে যাওয়া। “ইরানের কার্যকলাপ এখন আগের চেয়ে গোপনীয় ও আক্রমণাত্মক,” বলছে রিপোর্টটি। এটি বিশ্বব্যাপী নজরদারি ব্যবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

এই পরিস্থিতিতে ওমানের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি কথা হবে। কিন্তু ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানিয়েছেন, আলোচনা পরোক্ষভাবে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রতিবেদন ইরানের উপর চাপ বাড়াতে পারে, তবে তেহরান কতটা স্বচ্ছতা দেখাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে—এই আলোচনা কি শান্তির পথ খুলবে, নাকি পারমাণবিক সংকট আরও জটিল হবে?