হুথিসিং জৈন মন্দির: ১৭৭ বছরের শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন

হুথিসিং জৈন মন্দির: ১৭৭ বছরের শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন

আহমেদাবাদ: গুজরাটের আহমেদাবাদে অবস্থিত হুথিসিং জৈন মন্দির ১৭৭ বছরের পুরোনো শিল্পকলা ও আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য সংমিশ্রণ। ১৮৪৮ সালে ধনী জৈন ব্যবসায়ী শেঠ হুথিসিং কেশরীসিং এই মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করেন, যা শ্বেতাম্বর জৈন সম্প্রদায়ের ১৫তম তীর্থঙ্কর ভগবান ধর্মনাথকে উৎসর্গীকৃত। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী শেঠানি হরকুঁবর এটি সম্পূর্ণ করেন। “এই মন্দির ধর্মীয় ভাবনার পাশাপাশি সমাজকল্যাণের প্রতীক,” বলেছেন স্থানীয় ইতিহাসবিদ প্রফেসর রমেশ ঠাকুর। তৎকালীন ১০ লক্ষ টাকার ব্যয়, আজকের ৭৫ কোটির সমতুল্য, গুজরাটের দুর্ভিক্ষের সময় কারিগরদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করেছিল।

মন্দিরের মারু-গুর্জর স্থাপত্য শৈলী এবং হাভেলি উপাদানের মিশ্রণ এটিকে ব্যতিক্রমী করে। শ্বেত মর্মরে নির্মিত এই দ্বিতল মন্দিরে রয়েছে ৫২টি উপাশ্রয়, নকশাকাটা স্তম্ভ, অলংকৃত দেয়াল এবং জালিকাঠামো। মূল মণ্ডপে ভগবান ধর্মনাথের ২.৫ মিটার উঁচু মূর্তি এবং ৫২ তীর্থঙ্করের ক্ষুদ্র মন্দির দর্শনীয়। “এর শিল্পকলা দিলওয়াড়া ও রানাকপুর মন্দিরের সঙ্গে তুলনীয়,” বলেছেন স্থপতি দীপক শাহ। মন্দিরের মহাবীর স্তম্ভ, ২০০৩ সালে ভগবান মহাবীরের ২৫০০তম জয়ন্তীতে নির্মিত, রাজস্থানের চিতোর কীর্তি স্তম্ভ থেকে অনুপ্রাণিত।

হুথিসিং জৈন মন্দির আজও আধ্যাত্মিক ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রাণবন্ত। প্রতিদিনের আরতি ও পূজা এখানে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে। দিল্লি দরওয়াজার কাছে শাহিবাগ রোডে অবস্থিত এই মন্দির আহমেদাবাদ রেলস্টেশন থেকে মাত্র ৪ কিমি দূরে। প্রবেশ বিনামূল্যে, এবং অক্টোবর থেকে মার্চ দর্শনের জন্য উপযুক্ত সময়। স্থানীয় জৈন সম্প্রদায় ও হুথিসিং পরিবারের ট্রাস্ট এটির রক্ষণাবেক্ষণ করে, যা এটিকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষিত রাখে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *