ঝাড়গ্রামের দুধকুন্ডি বিমান ঘাঁটি, দেশের অস্থিরতায় নতুন করে আলোচনা

ঝাড়গ্রাম, ২৮ এপ্রিল ২০২৫: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঝাড়গ্রামের দুধকুন্ডিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গোপন বিমান ঘাঁটি ছিল, যেখান থেকে বোমারু বিমান জাপান, বার্মা ও থাইল্যান্ডের উদ্দেশে উড়ত। সাঁকরাইল ব্লকের জঙ্গলমাঝি এই ঘাঁটির ৫-৬ কিলোমিটার লম্বা ও ১০০ ফুট প্রশস্ত রানওয়ে এখনও অটুট। দেশজুড়ে যুদ্ধের আবহে এই ঐতিহাসিক বিমান ঘাঁটি নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। ঝাড়গ্রাম রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী বিক্রমাদিত্য মল্লদেব বলেন, “রাজবাড়ির নথি বলছে, ব্রিটিশ সরকারকে দুধকুন্ডির জঙ্গল লিজ দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন রাজা নরসিংহ মল্লদেব বিমান ঘাঁটি নির্মাণে সবরকম সহযোগিতা করেছিলেন।”
১৯৪২ সালে নির্মিত এই ঘাঁটি ১৯৪৫ পর্যন্ত মার্কিন বিমান বাহিনীর ৪৪৪তম বোমার্ডমেন্ট স্কোয়াড ব্যবহার করত। স্বাধীনতার পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর অধীনে চলে যায় এটি। বর্তমানে কলাইকুন্ডা এয়ারফোর্সের তত্ত্বাবধানে কিছু অংশে ফায়ারিং অনুশীলন হয়। গত বছর গোপীবল্লভপুরে সুবর্ণরেখা নদীর তীর থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা উদ্ধার হয়, যা বিমান বাহিনী ও পুলিশ নিষ্ক্রিয় করে। জাজল বোমারু বিমানের আক্রমণের ভয়ে ঝাড়গ্রামে এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি বসানো হয়েছিল। শহরের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ দাস (৬৫) বলেন, “ছোটবেলায় ঠাকুর্দার কাছে দুধকুন্ডির গল্প শুনেছি। রাজবাড়ির সামনে ক্রাউন রিজার্ভ পুলিশের প্যারেড দেখতে ভিড় হতো।”
দেশের পূর্ব ও পশ্চিমে আন্তর্জাতিক অস্থিরতার মধ্যে দুধকুন্ডির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় যুদ্ধের সময়ের ছবি সংরক্ষিত, যা সম্প্রতি ভারতীয় বিমান বাহিনীর আধিকারিকরা পরিদর্শন করেছেন। এই ঐতিহাসিক ঘাঁটি পূর্ব ভারতের কৌশলগত গুরুত্বের প্রতীক। যুদ্ধের আবহে শহরবাসী আজও দুধকুন্ডির গল্পে অতীতের স্মৃতি খুঁজে ফেরেন।