অক্ষয় তৃতীয়া ২০২৫: এই পূজা পদ্ধতিতে মা লক্ষ্মীর কৃপায় সমৃদ্ধি লাভ করুন

অক্ষয় তৃতীয়া, হিন্দু ও জৈন ধর্মে একটি অত্যন্ত শুভ পবিত্র দিন, যা বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে পালিত হয়। এ বছর ২০২৫ সালে অক্ষয় তৃতীয়া ৩০ এপ্রিল, বুধবার পড়ছে। ‘অক্ষয়’ অর্থ ‘যা কখনো কমে না’ এবং এই দিনটি সত্যযুগ ও ত্রেতাযুগের সূচনা এবং ভগবান পরশুরামের জন্মদিন হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনে বেদব্যাস মহাভারত রচনা শুরু করেন এবং ভগবান কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে ‘অক্ষয় পাত্র’ প্রদান করেন। “এই দিনে পূজা ও দান অক্ষয় ফল দেয়,” বলেছেন পণ্ডিত রামকৃষ্ণ শর্মা।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, অক্ষয় তৃতীয়ার তিথি ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৫:৩২ থেকে শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল দুপুর ২:১৫ পর্যন্ত থাকবে। এই দিনে পূজার জন্য সূর্যোদয়ের আগে স্নান করে, বিশেষত পবিত্র নদীতে স্নান, এবং হলুদ বস্ত্র পরা শুভ। পূজাস্থল গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করে, লাল বা হলুদ কাপড়ের উপর মা লক্ষ্মী ও ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি স্থাপন করতে হবে। রোলি, চন্দন, হলুদ ও কুমকুম দিয়ে তিলক করার পর বিষ্ণুকে হলুদ ফুল এবং লক্ষ্মীকে কমল বা গোলাপী ফুল নিবেদন করুন। জৌ বা গমের সত্তু, ফল, মিষ্টি ও ভিজে ছোলা ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। “বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ এই দিনে বিশেষ ফলদায়ী,” জানিয়েছেন পণ্ডিত শর্মা।
অক্ষয় তৃতীয়াকে ‘অবুঝ মুহূর্ত’ বলা হয়, যেখানে বিবাহ, গৃহপ্রবেশ বা নতুন ব্যবসা শুরুর জন্য কোনো মুহূর্ত দেখার প্রয়োজন হয় না। এই দিনে সোনা কেনা সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। দান-পুণ্য, যেমন অন্ন, বস্ত্র, জল বা সোনা-রুপো দান, অক্ষয় ফল দেয়। পিতৃতর্পণ ও শ্রাদ্ধকর্মও এই দিনে গুরুত্বপূর্ণ। মন্ত্র জপ, যেমন “ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লীং মহালক্ষ্ম্যৈ নমঃ” এবং “ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়”, মা লক্ষ্মীর কৃপা আকর্ষণ করে। এই পূজা ও দানের মাধ্যমে ঘরে সমৃদ্ধি ও সুখের প্রবাহ অব্যাহত থাকে।