ধর্ম ত্যাগের ঢেউ, মানুষ কেন বিশ্বাস ছাড়ছে?

ধর্ম ত্যাগের ঢেউ,  মানুষ কেন বিশ্বাস ছাড়ছে?

পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বের ৩৬টি দেশে প্রায় ২০% প্রাপ্তবয়স্ক তাদের শৈশবের ধর্ম ত্যাগ করেছে। খ্রিস্টধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষ কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছে না। উন্নত দেশগুলোতে এই প্রবণতি স্পষ্ট, যেখানে শিক্ষিত ও চিন্তাশীল ব্যক্তিরা ধর্মীয় বিশ্বাস প্রশ্ন করছেন। ইতিহাসবিদ যুবাল নোয়া হারারি বলেন, “ধর্ম শেষ হয় যেখানে দর্শন শুরু হয়, যেমন আলকেমি থেকে রসায়ন বা জ্যোতিষ থেকে জ্যোতির্বিদ্যা।”

এই ধর্মত্যাগের পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, শিক্ষার প্রসার এবং যুক্তিবাদী চিন্তার উত্থান। ধর্ম প্রায়শই নিশ্চিত উত্তর দাবি করে, কিন্তু সমালোচকদের মতে, এটি আরও প্রশ্ন সৃষ্টি করে। প্রয়াত নাস্তিক ক্রিস্টোফার হিচেনসের মতে, “সংগঠিত ধর্ম বিভাজন ও গোঁড়ামি সৃষ্টি করে।” উন্নত দেশগুলোতে মানুষ মুক্তচিন্তা ও দার্শনিক অনুসন্ধানের দিকে ঝুঁকছে, যা গোঁড়ামিকে প্রত্যাখ্যান করে। তৃতীয় বিশ্বে ধর্মীয়তা বাড়লেও, বিশ্বব্যাপী যুক্তিবাদের এই ঢেউ মানবজাতির বৌদ্ধিক বিবর্তনের সাক্ষ্য দেয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রভাব কমে যাওয়ায় সমাজে মুক্তচিন্তা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির সম্ভাবনা বাড়বে। তবে, এই রূপান্তর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক টানাপোড়েনের জন্ম দিতে পারে, বিশেষত যেখানে ধর্ম এখনও জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *