পারমাণবিক শক্তিতে চীনের দাপট, আমেরিকা-পশ্চিমের টেনশন বাড়ছে

পারমাণবিক শক্তিতে চীনের দাপট, আমেরিকা-পশ্চিমের টেনশন বাড়ছে

চীন পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চায়না নিউক্লিয়ার এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (সিএনইএ) ‘চায়না নিউক্লিয়ার এনার্জি ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০২৫’ অনুযায়ী, চীন একসঙ্গে ৪০টিরও বেশি পারমাণবিক ইউনিট নির্মাণের ক্ষমতা অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে চীন এই খাতে ১৪৬.৯ বিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ২০.১৬ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫২ বিলিয়ন ইউয়ান বেশি। এই অগ্রগতি চীনের স্বাধীন গবেষণা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং উন্নত নির্মাণ কৌশলের ফল। “চীন এখন বহু-ইউনিট পারমাণবিক প্রকল্পে বিশ্বনেতা,” বলেন সিএনইএ’র কার্যনির্বাহী সহ-সভাপতি কাও শুদং। তবে, এই উত্থান আমেরিকা ও পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

‘হুয়ালং ওয়ান’ রিঅ্যাক্টরের বড় আকারের নির্মাণের মাধ্যমে চীন পারমাণবিক শক্তির এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি শুধু দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে না, আন্তর্জাতিকভাবেও চীনের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করছে। চীন একক ইউনিট থেকে বহু-ইউনিট নির্মাণে উত্তরণ করেছে এবং ডোম উত্তোলনের মতো জটিল প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের গুণমান অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে চীন ১২টি পারমাণবিক গবেষণা ও পরীক্ষা প্ল্যাটফর্ম বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করেছে এবং থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও নাইজেরিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক চিকিৎসা, কৃষি ও শিল্প বিকিরণে সহযোগিতা শুরু করেছে। “এই পদক্ষেপ চীনের বিশ্ববাজারে প্রভাব বাড়াচ্ছে,” বলেন শক্তি বিশ্লেষক রাহুল মেহতা।

চীনের এই আক্রমণাত্মক কৌশল আমেরিকার উদ্বেগের কারণ। চীন কেবল প্রযুক্তিগত শক্তি বাড়াচ্ছে না, পারমাণবিক শক্তির বিশ্ব বাজারে দৃঢ় অবস্থান গড়ে তুলছে। এটি ভবিষ্যতে বিশ্ব শক্তির সমীকরণে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। পশ্চিমী দেশগুলি চীনের এই উত্থানকে ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। “চীনের এই প্রগতি শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন ভূ-রাজনীতি বিশেষজ্ঞ প্রিয়া শর্মা। চীনের এই পারমাণবিক শক্তি বিশ্ব মঞ্চে নতুন সমীকরণ তৈরি করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *