ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধ ও ৫১তম রাজ্যের হুমকি, কানাডার নির্বাচনে কীভাবে প্রভাব ফেলল?

অটোয়া, ২৯ এপ্রিল ২০২৫: কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল পার্টির জয়ের পিছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধ এবং কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম রাজ্য বানানোর হুমকি কানাডার ভোটারদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী উত্তেজনা জাগিয়েছে, যা লিবারেল পার্টির পক্ষে কাজ করেছে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ধারণা ছিল, এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা লিবারেল পার্টি ২০২৫ সালে পরাজিত হবে। কিন্তু ট্রাম্পের আগ্রাসী নীতি লিবারেলদের সমর্থন বাড়িয়ে দেয়।
ট্রাম্পের হুমকি ও কার্নির কৌশল
জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী হন মার্ক কার্নি, যিনি রাজনীতির পরিবর্তে অর্থনীতিতে মনোযোগ দেন। ট্যারিফ যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের সংকটে কার্নি কূটনৈতিক লড়াই এড়িয়ে অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে ঝুঁকেন। তিনি কর হ্রাস ও আবাসন সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্ধারিত অক্টোবরের পরিবর্তে তিনি ২৮ এপ্রিল নির্বাচনের ঘোষণা করেন, যা ট্রুডোর অপ্রিয়তায় ক্ষতিগ্রস্ত লিবারেল পার্টিকে শক্তি জোগায়। কার্নি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ভাঙতে চান, যাতে আমেরিকা আমাদের মালিকানা নিতে পারে। এটা কখনোই হবে না।”
ট্রুডোর ভারত-বিরোধী অবস্থান ও কার্নির পরিবর্তন
ট্রুডোর আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়, বিশেষত তাঁর খালিস্তানপন্থীদের প্রতি কথিত সমর্থনের কারণে। ট্রাম্পের ৫১তম রাজ্যের হুমকি কানাডিয়ানদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ জাগায়, এবং কনজারভেটিভ নেতা পিয়ের পোয়েলিভ্রের ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা তাঁর জনপ্রিয়তা কমায়। কার্নি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দেন, যা ভারতীয় কানাডিয়ানদের ভোট আকর্ষণ করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের আশা প্রকাশ করেন।
নির্বাচনের ফলাফল ও চ্যালেঞ্জ
লিবারেল পার্টি ১৬৮টি আসনে এগিয়ে থাকলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১৭২টি আসন পায়নি। কনজারভেটিভরা ১৪৪টি আসন পেলেও পোয়েলিভ্র নিজের আসন হারান। এনডিপি নেতা জগমীত সিংও পরাজিত হয়ে দলের সভাপতি পদ ছাড়েন। কার্নির সামনে এখন সংখ্যালঘু সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জ। তবে তাঁর জয় বিশ্বব্যাপী উদারবাদীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে, যা ট্রাম্পের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে কানাডিয়ান সার্বভৌমত্বের জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।