পাহলগাম হামলার পর পাকিস্তানে সেনা-পুলিশ সংঘর্ষ: ‘রাইফেল নামাও, জেনারেল এলেও কিছু করতে পারবে না’

পাহলগাম হামলার পর পাকিস্তানে সেনা-পুলিশ সংঘর্ষ: ‘রাইফেল নামাও, জেনারেল এলেও কিছু করতে পারবে না’

পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের নেতারা যে সেনাবাহিনীর দম্ভে ভারতকে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন, সেই সেনাই এখন নিজ দেশের পুলিশের কাছে লাঞ্ছিত হচ্ছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার লাক্কি মারওয়াত জেলায় সেনা ও স্থানীয় পুলিশের মধ্যে উত্তপ্ত সংঘর্ষের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ও সেনা পরস্পরের দিকে বন্দুক তাক করেছে। ভিডিওতে এক পুলিশ কর্মী সেনাকে চিৎকার করে বলছেন, “রাইফেল নামাও, বাজে কথা বোলো না। কাশ্মীরে যাও, এখানে কী করছ? তোমার জেনারেল এলেও কিছু করতে পারবে না!” এই ঘটনা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রতি ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রতিফলন।

লাক্কি মারওয়াতে এই সংঘর্ষ কেন ঘটল, তা বোঝার জন্য এলাকার প্রেক্ষাপট জানা জরুরি। খাইবার পাখতুনখোয়ার এই অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনা দীর্ঘদিন ধরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযানের নামে স্থানীয়দের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। কিন্তু এবার পুলিশের এই প্রকাশ্য বিদ্রোহ ইঙ্গিত দেয়, পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। “এটি কেবল একটি ঘটনা নয়, বরং একটি বৃহত্তর বিদ্রোহের সংকেত,” বলেন ইসলামাবাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষক তালহা সাঈদ। সেনার দমননীতি ও অত্যাচারে ক্লান্ত হয়ে স্থানীয় পুলিশ এখন নিজেরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।

এই ঘটনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকটের গভীরতা তুলে ধরে। খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে সেনার দমননীতির বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ বছরের পর বছর ধরে তীব্র হচ্ছে। এখন রাষ্ট্রের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান, যেমন পুলিশ, সেনার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে। “সেনার তানাশাহি মনোভাব এখন নিজেদের উপরই ভারী পড়ছে,” বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফারুক আহমেদ। লাক্কি মারওয়াতের ঘটনা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সতর্কবার্তা দিচ্ছে—নীতি পরিবর্তন না হলে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ আরও জটিল হবে।

এই সংঘর্ষ পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের ক্রমহ্রাসমান প্রভাবের ইঙ্গিত। যে সেনা নিজেকে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর মনে করত, তাদের এখন নিজ দেশের পুলিশের কাছে অপমান সহ্য করতে হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঘটনা আগামী দিনে আরও তীব্র হতে পারে, যা পাকিস্তানের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নতুন সংকট তৈরি করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *