বনগাঁর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পেটের তীব্র ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া ৪৫ বছর বয়সী সাগর বিবির শরীর থেকে প্রায় ৭ কেজি ওজনের একটি বিশাল টিউমার সফলভাবে অপসারণ করেছেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার সম্পন্ন এই জটিল অস্ত্রোপচারে সাগর বিবি নতুন জীবন পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল এবং নিবিড় পরিচর্যা কক্ষে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। “এই অস্ত্রোপচার ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু সময়মতো সিদ্ধান্ত জীবন বাঁচিয়েছে,” বলেন গাইনোকোলজিস্ট ডা. পলাশ বিশ্বাস।

মেহেরপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা সাগর বিবি দীর্ঘদিন ধরে পেটের অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে গেলেও রোগের সঠিক কারণ ধরা পড়েনি। বনগাঁর এই হাসপাতালে পরীক্ষার পর ডা. বিশ্বাস জানতে পারেন, সাগর বিবির গর্ভাশয়ে তরমুজের আকারের একটি ৭ কেজির টিউমার রয়েছে। “টিউমারের আকার এবং রোগীর পূর্ববর্তী দুটি জটিল অস্ত্রোপচারের ইতিহাস অপারেশনকে চ্যালেঞ্জিং করেছিল,” বলেন ডা. বিশ্বাস। তিনি জানান, দ্রুত অপসারণ না হলে টিউমারটি প্রাণঘাতী হতে পারত।

মঙ্গলবার সকালে সাগর বিবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডা. পলাশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে অ্যানেস্থেটিস্ট ডা. এন.সি. মল্লিক ও অন্যান্য চিকিৎসকদের দল দীর্ঘক্ষণ ধরে এই জটিল অপারেশন সম্পন্ন করেন। “অস্ত্রোপচারের সময় আমরা অত্যন্ত সতর্ক ছিলাম। রোগীর স্থিতিশীলতা আমাদের সাফল্যের প্রমাণ,” বলেন ডা. মল্লিক। পরিবারের সদস্য মহম্মদ রফিক জানান, “ডাক্তারদের কারণে আমাদের পরিবার নতুন করে আশা পেয়েছে।”

এই সাফল্যে হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীরা স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুজিত দাস বলেন, “এমন জটিল কেসে সময়মতো হস্তক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বনগাঁর এই হাসপাতাল প্রমাণ করেছে যে সঠিক দক্ষতা জীবন বাঁচাতে পারে।” সাগর বিবির পরিবার চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তাঁদের দ্রুত সিদ্ধান্ত এবং অধ্যবসায় একটি জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে।