আমেরিকায় ভারতীয় মূলের সিইও-র রক্তাক্ত ঘটনা, পত্নী ও পুত্রকে গুলির পরে আত্মহত্যা

আমেরিকায় ভারতীয় মূলের সিইও-র রক্তাক্ত ঘটনা, পত্নী ও পুত্রকে গুলির পরে আত্মহত্যা

আমেরিকার ওয়াশিংটনের নিউক্যাসল থেকে উঠে এসেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। ভারতীয় মূলের টেক উদ্যোক্তা হর্ষবর্ধন কিক্কেরি (৫৭) কথিতভাবে তাঁর পত্নী শ্বেতা জলয়াম (৪৪) এবং ১৪ বছরের পুত্র ধ্রুব কিক্কেরিকে গুলি করে হত্যা করেছেন, এরপর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। ২৪ এপ্রিল তাঁদের টাউনহাউসে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। কিং কাউন্টি শেরিফ অফিসের মুখপাত্র ব্র্যান্ডিন হল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে এটি হত্যা-আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। তবে এর পিছনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।”

পুলিশ ৯১১-এ জরুরি কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। মেডিকেল পরীক্ষকের রিপোর্টে নিশ্চিত হয় যে শ্বেতার ধড়ে এবং ধ্রুবের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, যা হত্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। হর্ষবর্ধন নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। পড়শি ক্যাথি ডানবার বলেন, “এই পরিবার খুব শান্ত এবং নিজেদের মধ্যে থাকত। তাদের থেকে এমন ঘটনা কল্পনাও করা যায় না।” দম্পতির ৭ বছরের ছোট ছেলে ঘটনার সময় বাড়ির বাইরে থাকায় বেঁচে যায়, এখন সে একাই রয়ে গেছে।

হর্ষবর্ধন কর্নাটকের মাণ্ড্যা জেলার কিক্কেরি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। মাইসুরু ও আমেরিকার সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে তিনি মাইক্রোসফটে রোবোটিক্স বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৭ সালে পত্নী শ্বেতার সঙ্গে মিলে তিনি মাইসুরুতে হোলোওয়ার্ল্ড নামে একটি রোবোটিক্স স্টার্টআপ শুরু করেন, যা ২০২২ সালে বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা আমেরিকায় ফিরে হোলোস্যুট নামে উন্নত প্রযুক্তি প্রকল্পে কাজ করেন, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। “তাঁর প্রযুক্তিগত সাফল্যের পিছনে মানসিক চাপ ছিল, যা হয়তো কেউ বুঝতে পারেনি,” বলেন স্থানীয় বিশ্লেষক রাজেশ শেঠি।

এই ঘটনা ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়কে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। পুলিশ তদন্তে জানার চেষ্টা করছে, পারিবারিক কলহ, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বা আর্থিক চাপ কি এই ত্রাসদায়ক ঘটনার কারণ। হর্ষবর্ধনের পিতা কিক্কেরি নারায়ণ ছিলেন একজন বিখ্যাত ভাষাবিদ। তাঁর পরিবার ও সম্প্রদায় এখন শোকের ছায়ায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *