দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন: প্রতি ঘরে পৌঁছাবে প্রসাদ ও চিত্র, ঘোষণা মমতার

দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন: প্রতি ঘরে পৌঁছাবে প্রসাদ ও চিত্র, ঘোষণা মমতার

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই উদ্বোধনকে রাজনৈতিক মহলে ‘নরম হিন্দুত্ব’ কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা ঘোষণা করেন, “ভগবান জগন্নাথের প্রসাদ ও চিত্র পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ঘরে এবং ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “এই মন্দির আমি মা-মাটি-মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করছি।”

মন্দিরটি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত। এতে রয়েছে অষ্টধাতুর নীল চক্র, চারটি প্রবেশদ্বার, গর্ভগৃহ, রঙ্গমঞ্চ, ভোজন কক্ষ এবং পাথর ও নিম কাঠের মূর্তি। মন্দির চত্বরে ৫০০টিরও বেশি গাছ রোপণ করা হয়েছে। মমতা বলেন, “এই মন্দির আগামী হাজার বছর ধরে ভক্তি ও ধর্মীয় সম্প্রীতির কেন্দ্র হয়ে থাকবে।” তিনি হিডকো এবং স্থানীয়দের প্রশংসা করে বলেন, “উত্তর থেকে দক্ষিণ বঙ্গের মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া এত বড় কাজ সম্ভব হত না।” মন্দিরের কপাট খোলার পর অতিথিদের প্রসাদ পাঠানো হবে, এবং সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে এতে যুক্ত হবেন।

এই উদ্বোধনের রাজনৈতিক তাৎপর্য উল্লেখযোগ্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায় বলেন, “মন্দির উদ্বোধন এবং প্রসাদ বিতরণের ঘোষণা মমতার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংযোগ গড়ার কৌশল।” তিন বছর ধরে নির্মাণাধীন এই মন্দির প্রকল্পে সংগীতশিল্পী, শিল্পপতি এবং পুরোহিতদের অবদানের কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, “এই মন্দির সকলের প্রচেষ্টার ফল। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই।” মন্দিরের পাশে গাজা-পারা-খাজার দোকানও তৈরি হচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

দীঘার এই জগন্নাথ মন্দির ধর্মীয় পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। “এই মন্দির কেবল ভক্তির স্থান নয়, বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক,” বলেন স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ মাইতি। মমতার এই পদক্ষেপ ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং রাজনৈতিক কৌশলের মিশ্রণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ভাবমূর্তি শক্তিশালী করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *