ভারত-পাক সীমান্তে গোলাগুলি, সৌদি আরবের শান্তির আহ্বান

ভারত-পাক সীমান্তে গোলাগুলি, সৌদি আরবের শান্তির আহ্বান

জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি উত্তেজনাকে চরমে তুলেছে। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব বুধবার এক বিবৃতিতে উভয় দেশকে সংযম ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ লিখেছে, “ভারত-পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা উদ্বেগজনক। উভয় দেশকে শান্তি ও কূটনীতির পথে হাঁটতে হবে।” এই আহ্বান যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।

পাহলগাম হামলার পর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তিনজন সন্ত্রাসীর পরিচয় শনাক্ত করেছে, যাদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে। লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি) ও পারগওয়াল সেক্টরে টানা ছয় দিন ধরে পাকিস্তানের ‘অযাচিত’ গোলাগুলির জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। “আমাদের সৈন্যরা দ্রুত ও পরিমিতভাবে জবাব দিয়েছে,” বলেন এক ভারতীয় সেনা মুখপাত্র। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি, ভারত আগামী ২৪-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে, যা উত্তেজনাকে আরও জটিল করেছে।

সৌদি আরবের এই বিবৃতি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগের প্রতিফলন। আমেরিকা, ফ্রান্স ও জাপান পরোক্ষভাবে ভারতের অবস্থান সমর্থন করলেও, সৌদির নিরপেক্ষ আহ্বান পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। “সৌদির বক্তব্য শান্তির পথে ফিরতে উভয় দেশের জন্য একটি বার্তা,” বলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক সুজিত দাস। তবে সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাহলগাম হামলার জন্য দায়ীদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ পাকিস্তানকে চাপে ফেলেছে। সৌদি আরবের আহ্বান কি এই সংকটে শান্তি ফেরাতে পারবে, নাকি দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যুদ্ধের দিকে এগোবে—এটাই এখন বিশ্বের প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন ভারত ও পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *