সামাজিক ন্যায়ের লড়াইয়ে রাহুল, জাতিগত জনগণনার ইতিহাসে নতুন অধ্যায়

সামাজিক ন্যায়ের লড়াইয়ে রাহুল, জাতিগত জনগণনার ইতিহাসে নতুন অধ্যায়

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ভারতে জাতিগত জনগণনা হতে চলেছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, আগামী জনগণনায় জাতিভিত্তিক তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব রাহুল গান্ধীর প্রচারণার কারণে দাবি করছে, যিনি সামাজিক ন্যায়ের জন্য এই ইস্যুতে সরব ছিলেন। “রাহুল গান্ধীর অবিরাম প্রচারণা এই সিদ্ধান্তকে সম্ভব করেছে,” বলেন কংগ্রেস নেতা সুপ্রিয়া শ্রীনাথ। বিজেপি অবশ্য এটিকে মোদি সরকারের সামাজিক ন্যায়ের প্রতিশ্রুতি হিসেবে উপস্থাপন করছে।

কিন্তু জাতিগত জনগণনার ইতিহাসে কংগ্রেসের অবস্থান ছিল ভিন্ন। স্বাধীনতার আগে ১৮৮১ থেকে ১৯৩১ পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসনে জাতিগত জনগণনা হতো, কিন্তু ১৯৪১-এ মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভা ধর্মভিত্তিক পরিচয়ের উপর জোর দেওয়ায় এই প্রথা বন্ধ হয়। স্বাধীনতার পর নেহরু (১৯৫১, ১৯৬১), ইন্দিরা (১৯৭১, ১৯৮১) ও রাজীব গান্ধীর আমলে জাতিগত জনগণনার প্রস্তাব ব্রিটিশ ‘বিভাজন নীতি’র অংশ বলে প্রত্যাখ্যাত হয়। ১৯৫১-এ সংসদে নেহরু, সর্দার পটেল ও আবুল কালাম আজাদ এর বিরোধিতা করেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী এই ইস্যুকে সামাজিক ন্যায়ের মূল অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে রাজনৈতিক ভিত্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছেন।

রাহুল ২০১১-এর সামাজিক-অর্থনৈতিক জরিপের তথ্য প্রকাশের দাবি থেকে শুরু করে ‘জিতনি আবাদি, উতনা হক’ স্লোগান দিয়ে জাতিগত জনগণনাকে প্রচারণার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। কংগ্রেসের উদয়পুর ও রায়পুর সম্মেলনে এই দাবি দলের এজেন্ডায় স্থান পায়, এমনকি দলীয় সংগঠনে ৫০% সংরক্ষণের প্রস্তাবও পাস হয়। বিজেপি রাহুলের এই প্রচারণাকে ‘জাতিগত বিভাজন’ বলে সমালোচনা করলেও, মোদি সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে রাহুল বলেন, “আমরা সংসদে বলেছিলাম, জাতিগত জনগণনা করিয়েই ছাড়ব।” তিনি সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেও এর সময়সীমা জানতে চেয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *