আইআইটি বিএইচইউ ও সরস এআই-এর হাত মিলিয়ে ভারতের ছাত্রদের এআই দিয়ে ক্ষমতায়ন

আইআইটি বিএইচইউ ও সরস এআই-এর হাত মিলিয়ে ভারতের ছাত্রদের এআই দিয়ে ক্ষমতায়ন

ভারতের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি), বিএইচইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরস এআই ইনস্টিটিউটের মধ্যে এক ঐতিহাসিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের মাধ্যমে। বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণ অনলাইন এআই-কেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরস এআই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এই সহযোগিতা ভারতের ছাত্রদের গ্লোবাল এআই শিক্ষার সুযোগ এনে দেবে। আইআইটি বিএইচইউ-এর পরিচালক প্রফেসর অমিত পাত্র বলেন, “এই অংশীদারিত্ব ভারতের ডিজিটাল ও অর্থনৈতিক রূপান্তরে ছাত্রদের অবদানের জন্য প্রস্তুত করবে, যেকোনো বিষয়ের ছাত্রই এআই শিখতে পারবে।” এই উদ্যোগ ভারতের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এই চুক্তির অধীনে, সরস এআই ইনস্টিটিউটের ৮ সপ্তাহের ‘পাওয়ার্স অফ এআই’ কোর্সটি আইআইটি বিএইচইউ-এর সকল স্নাতক ছাত্রদের জন্য ওপেন ইলেকটিভ হিসেবে চালু হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান, মানবিক বা সমাজবিজ্ঞান—সব শাখার ছাত্ররা এই কোর্সে অংশ নিতে পারবেন। কোর্সটি তাত্ত্বিক শিক্ষার চেয়ে ব্যবহারিক প্রয়োগের উপর জোর দেবে, যাতে ছাত্ররা এআই টুলস ব্যবহার করে বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে শিখতে পারে। সরস এআই-এর প্রতিষ্ঠাতা অনিল সিং বলেন, “আমরা ভারতের প্রতিভাবান ছাত্রদের এআই-এর মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃত্বে অবদান রাখার সুযোগ দিতে চাই।” এছাড়া, ছাত্ররা এআই মাইনর, অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি এবং ইন্ডাস্ট্রি-স্বীকৃত সার্টিফিকেশন কোর্সের সুযোগ পাবেন।

এই সহযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হল ‘এআই ইভালুয়েটর’ নামে একটি অত্যাধুনিক এআই-চালিত মূল্যায়ন টুল তৈরি। এই টুলটি ছাত্রদের অগ্রগতি রিয়েল-টাইমে ট্র্যাক করবে, গভীর শিক্ষার ইনসাইট দেবে এবং শিক্ষকদের জন্য মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সহজ করবে। “এই টুলটি ডিজিটাল শিক্ষাকে আরও কার্যকর এবং ব্যক্তিগতকৃত করবে,” বলেন সরস এআই-এর প্রধান ছাত্র সাফল্য কর্মকর্তা শৈলেশ কুমার। এছাড়া, আইআইটি বিএইচইউ এবং সরস যৌথভাবে এআই হ্যাকাথন, ওয়ার্কশপ, গেস্ট লেকচার এবং গবেষণা প্রকল্পের আয়োজন করবে, যা ছাত্রদের ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও উদ্ভাবনের সুযোগ দেবে।

এই পদক্ষেপ ভারতের এআই শিক্ষার প্রসার এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া ব্যবধান কমানোর দিকে এক বড় পদক্ষেপ। বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে এআই ৯৭ মিলিয়ন নতুন চাকরি তৈরি করবে। এই সহযোগিতা ভারতের ছাত্রদের সেই সুযোগের জন্য প্রস্তুত করবে, যাতে তারা কেবল চাকরিপ্রার্থী নয়, এআই-চালিত স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনের নেতৃত্বও দিতে পারে। এই উদ্যোগ ভারতকে গ্লোবাল এআই লিডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *