বেতাব ভ্যালিতে লুকানো অস্ত্র, পাহলগাম হামলায় পাক সেনার হাত, এনআইএ-র তদন্তে উঠে এল তথ্য

বেতাব ভ্যালিতে লুকানো অস্ত্র, পাহলগাম হামলায় পাক সেনার হাত, এনআইএ-র তদন্তে উঠে এল তথ্য

শ্রীনগর: দক্ষিণ কাশ্মীরের পাহলগামের বাইসারান মেডোতে গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এনআইএ-র তদন্তে উঠে এসেছে, পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি), পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে এই হামলা পরিকল্পিত হয়েছিল। “এই হামলার পিছনে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) থেকে কাশ্মীর উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি জটিল ষড়যন্ত্রের জাল রয়েছে,” জানান এনআইএ-র এক কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা পাহলগামের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ও বলিউড শুটিং স্পট বেতাব ভ্যালিতে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল, যা হামলার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। স্থানীয় ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কাররা (ওজিডব্লিউ) এই হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নজরদারি, আশ্রয় এবং লজিস্টিক সাপোর্ট। এনআইএ ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন ওজিডব্লিউদের একটি তালিকা তৈরি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে “আইনি ও প্রশাসনিক” ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। প্রায় ১৫০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, ঘটনাস্থলের ৩ডি পুনর্গঠন এবং ব্যালিস্টিক প্রমাণ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত খালি কার্তুজ ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে, যার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে।

এনআইএ-র প্রতিবেদনে নিশ্চিত হয়েছে যে, হামলাকারীরা পিওকে-তে থাকা তাদের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছিল এবং তারা এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরের কোথাও অবস্থান করছে। এনআইএ-র মহাপরিচালকের তত্ত্বাবধানে তৈরি এই প্রতিবেদন এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। “এই হামলা শুধু নিরীহ পর্যটকদের উপর আঘাত নয়, বরং কাশ্মীরের শান্তি ও সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র,” বলেন একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক। এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, এবং এনআইএ-র তদন্ত এখন এই ষড়যন্ত্রের মূল উৎস উন্মোচনে কেন্দ্রীভূত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *