ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, লাহোর ও করাচির আকাশসীমা আংশিক বন্ধের পেছনে কী কারণ?

ইসলামাবাদ: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান সুরক্ষার কারণ দেখিয়ে লাহোর ও করাচির ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিয়নের (এফআইআর) কিছু নির্দিষ্ট আকাশপথ ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আংশিকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) একটি নোটিশ টু এয়ারমেন (নোটাম) জারি করে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ ‘অপারেশনাল কারণে’ নেওয়া হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এপ্রিলে পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতিই এর প্রধান কারণ। সিএএর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বিবিসি উর্দুকে বলেন, “এই ব্যবস্থা যাত্রীবাহী উড়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নেওয়া হয়েছে।”
নোটামে বলা হয়েছে, ৯,০০০ থেকে ২৫,০০০ ফুট উচ্চতার মধ্যে থাকা আকাশপথগুলো বন্ধ থাকবে, তবে বাণিজ্যিক উড়ানগুলো বিকল্প রুটে চলবে। সিএএ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না। পাকিস্তানের সাবেক সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা আফসার মালিক বিবিসিকে বলেন, “যুদ্ধ পরিস্থিতি বা উত্তেজনার সময় এমন পদক্ষেপ সতর্কতা হিসেবে নেওয়া হয়। যাত্রীবাহী উড়ানের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে, বিশেষ করে যখন সামরিক উড়ান সক্রিয় থাকে।” তিনি যোগ করেন, সাধারণত যুদ্ধবিমান ৩০,০০০ থেকে ৩৭,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়ে, তাই নিম্নতর আকাশপথ বন্ধ করা যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য।
এই পদক্ষেপ পাহালগাম হামলার পর ভারতের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার দুই দিন আগে বলেছিলেন, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে। অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর ড. আদিল সুলতান বিবিসিকে বলেন, “সামরিক উড়ানের সময় বেসামরিক উড়ানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করা স্বাভাবিক। এটি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার প্রতিফলন।” বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিস্থিতি উন্নত হলে এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হতে পারে। এদিকে, এয়ারলাইনগুলো বিকল্প রুট নির্ধারণ করে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখছে, যদিও এতে সময় ও জ্বালানি খরচ বাড়ছে।