যুদ্ধ নয়, কর্মসংস্কৃতির সংকট, ভারত-পাকিস্তানে গ্যালপ রিপোর্টে চাঞ্চল্য

যুদ্ধ নয়, কর্মসংস্কৃতির সংকট, ভারত-পাকিস্তানে গ্যালপ রিপোর্টে চাঞ্চল্য

নয়াদিল্লি/ইসলামাবাদ: জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে গ্যালপের ‘স্টেট অফ দ্য গ্লোবাল ওয়ার্কপ্লেস ২০২৫’ রিপোর্ট এক নতুন বাস্তবতা উন্মোচন করেছে, যা উভয় দেশের মানুষকে হতবাক করেছে। এই রিপোর্ট শুধু পাকিস্তানের নয়, ভারত, আফগানিস্তান, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার কর্মসংস্কৃতির অসন্তোষের চিত্র তুলে ধরেছে। দিল্লির এইচআর বিশেষজ্ঞ রাহুল মেহতা বলেন, “কর্মচারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ উৎপাদনশীলতা ও অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”

গ্যালপের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কর্মচারীদের ইনগেজমেন্ট ২০২৪ সালে ২৩% থেকে কমে ২০২৫ সালে ২১%-এ দাঁড়িয়েছে, যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতির ৪৩৮ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। ভারতে কর্মচারী ইনগেজমেন্ট ৩৩% থেকে ৩০%-এ নেমেছে, যেখানে ৩৪% কর্মচারী প্রতিদিন কাজে যাওয়ার সময় ক্রোধ এবং ৩০% তীব্র চাপ অনুভব করেন। তুলনায়, চিনে এই হার ১৮% এবং ফিনল্যান্ডে মাত্র ৬%। রিপোর্টে আরও প্রকাশ, ৪৯% ভারতীয় কর্মচারী নতুন চাকরির সন্ধানে রয়েছেন, যা তাঁদের বর্তমান কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষের ইঙ্গিত দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সোমবারের ভয়’ বা ‘ছুটির অপেক্ষা’ নিয়ে মিম এই হতাশারই প্রতিফলন।

পাকিস্তানের অবস্থাও ভিন্ন নয়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে কর্মচারীদের মধ্যে দৈনিক চাপ ও ক্রোধের হার সর্বোচ্চ। শহরাঞ্চলে অনেক পেশাদার সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন, যা তাঁদের মানসিক চাপ বাড়ায়। ইসলামাবাদের এক কর্মচারী আলি হাসান বলেন, “অফিসে যাওয়া যেন যুদ্ধের মতো। আমরা শান্তি ও ভালো কর্মপরিবেশ চাই।” এই রিপোর্ট যুদ্ধের আলোচনার মধ্যে একটি বড় সত্য তুলে ধরেছে—ভারত ও পাকিস্তানের মানুষ যুদ্ধ নয়, স্থিতিশীল কর্মজীবন ও মানসিক শান্তি চায়। এই অসন্তোষ মোকাবিলা না করলে উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *