মাদক পাচার মামলায় ৩ ভারতীয়ের ফাঁসির সাজা, ভারতীয় দূতাবাসকে হাইকোর্টের আইনি সহায়তার নির্দেশ

দিল্লি হাইকোর্ট শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ায় মাদক পাচার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন ভারতীয় নাগরিকের জন্য আইনি সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা পর্যাপ্ত আইনি প্রতিনিধিত্ব এবং আপিলের সুযোগ পান। বিচারপতি সচিন দত্ত এই রায় দিয়েছেন দোষীদের স্ত্রীদের দায়ের করা একটি আবেদনের শুনানির পর। তিনি বিদেশ মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি উত্থাপন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে।
তিন ভারতীয় নাগরিক—তামিলনাড়ুর রাজু মুথুকুমারন, সেলভাদুরাই দিনাকরণ এবং গোবিন্দস্বামী বিমলকান্ধন—২০২৪ সালের জুলাই মাসে ইন্দোনেশিয়ার তানজুং বালাই কারিমুন জেলায় ১০৬ কিলোগ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (একটি মাদকদ্রব্য) পাচারের অভিযোগে একটি মালবাহী জাহাজ থেকে গ্রেপ্তার হন। সম্প্রতি স্থানীয় জেলা আদালত তাঁদের মাদকদ্রব্য আইনের অধীনে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে। আবেদনে বলা হয়েছে, তিনজনই সিঙ্গাপুরের একটি শিপিং কো ম্পা নিতে কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ করতেন এবং তাঁদের আর্থিক সংস্থান সীমিত। আপিল দায়েরের সময়সীমা অত্যন্ত কঠোর হওয়ায় জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজন।
আদালত ভারতীয় কনস্যুলেটকে দোষীদের এবং ভারতে তাঁদের পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। যাচিকাকারীরা গত ২৯ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার আদালতের রায়ের কপি পেয়েছেন, এবং এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ মে নির্ধারিত হয়েছে। বিচারপতি দত্ত জোর দিয়ে বলেছেন, “কনস্যুলেটকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আইনি সহায়তা নিশ্চিত হয়।” এই নির্দেশনা কেবল আইনি সহায়তাই নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।
এই হস্তক্ষেপ তিন ভারতীয় নাগরিকের জীবন রক্ষার আশা জাগিয়েছে। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং ভারত সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাঁদের ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা বাড়ছে। বর্তমানে পরিবারগুলো আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা করছে যে আপিল প্রক্রিয়ায় তাঁদের প্রিয়জনদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে।