পাকিস্তানের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি, ভারতের অভিযোগ খারিজ করে মুসলিম দেশগুলোর সমর্থন চাইলেন শরিফ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহবাজ শরিফ শুক্রবার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং কুয়েতের মতো মিত্র মুসলিম দেশগুলোর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে তারা প্রথমগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কমাতে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের প্রথমগামে এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। সরকারি রেডিও পাকিস্তানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরিফ ইসলামাবাদে সৌদি রাষ্ট্রদূত নাওয়াফ বিন সাঈদ আল-মালিকি, ইউএই’র রাষ্ট্রদূত হামাদ ওবায়েদ আল-জাবি এবং কুয়েতের রাষ্ট্রদূত নাসির আব্দুল রহমান জাসিরের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
শরিফ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ভারতের “ভিত্তিহীন অভিযোগ” স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেন, যেখানে প্রথমগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়ানো হয়েছে। সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, “কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।” তিনি হামলার “স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ” আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানান। কুয়েতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে শরিফ পাকিস্তানের অবস্থানের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য প্রস্তুত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের প্রস্তাব পেশ করেছি।” পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ইউএই’র রাষ্ট্রদূত হামাদের সঙ্গে বৈঠকে শরিফ প্রথমগাম হামলার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এবং সন্ত্রাসবাদের সব রূপের বিরুদ্ধে তাঁর দেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি ইউএই’র “অটুট সমর্থন” এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। সরকারি সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অফ পাকিস্তানের খবরে বলা হয়, তিন রাষ্ট্রদূতই আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ভারতের কঠোর অবস্থানের মুখে পাকিস্তানের উদ্বেগকে প্রতিফলিত করে।
শরিফের এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যস্থতার ওপর পাকিস্তানের নির্ভরতাকে তুলে ধরে। তবে, ভারতের অভিযোগ এবং পাকিস্তানের প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্তই হতে পারে একমাত্র পথ। এই ঘটনা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের আরেকটি অধ্যায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।