পাকিস্তান থেকে সেন্ধা নুনের আমদানি বন্ধ, ভারতে বাড়তে পারে দাম

ভারতীয় রান্নাঘর ও ধর্মীয় রীতিনীতিতে সেন্ধা নুন (রক সল্ট) একটি অপরিহার্য উপাদান, যা উৎসব, উপবাস এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই নুন, যাকে হিমালয়ান পিঙ্ক সল্টও বলা হয়, ভারতের প্রায় ৮০% পরিবারে ব্যবহৃত হয়। তবে, এর বেশিরভাগই পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের খেউড়া নুন খনি থেকে আমদানি করা হতো, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নুন খনি। পাকিস্তানে এই নুন ২-৩ রুপি প্রতি কেজি মূল্যে পাওয়া গেলেও, ভারতে ট্যাক্স, প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে এর দাম ৩০-৪০ রুপি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। “পাকিস্তানে নুনের উৎপাদন খরচ কম, কিন্তু ভারতে আমদানি প্রক্রিয়া এটিকে দামি করে তোলে,” বলেছেন বাণিজ্য বিশ্লেষক রাহুল মেহতা।
২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তান থেকে সমস্ত আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যার মধ্যে সেন্ধা নুনও রয়েছে। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত তার বিদেশ বাণিজ্য নীতি (এফটিপি) সংশোধন করে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষ বাণিজ্য বন্ধ করেছে। ২০২৪ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতের মোট আমদানি ছিল প্রায় ৫৫০ কোটি রুপি, যা ২০২৩-এর তুলনায় ১৬.৬% কম। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সেন্ধা নুনের দাম বাড়তে পারে, বিশেষ করে উৎসবের মরসুমে যখন এর চাহিদা তুঙ্গে থাকে।
ভারতে সেন্ধা নুনের স্থানীয় উৎপাদন রাজস্থানের সাম্ভার লেকের মতো কয়েকটি খনিতে সীমিত। পাকিস্তানের উপর নির্ভরতা কমাতে ভারত ২০১৯ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ইরান, মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ থেকে নুন আমদানি করছে। “এই নিষেধাজ্ঞা ভারতকে স্বদেশী উৎপাদন বাড়ানোর দিকে ঠেলে দেবে,” বলেছেন অর্থনীতিবিদ সুজিত চৌধুরী। তবে, স্বল্প মেয়াদে দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহে ঘাটতি ব্যবসায়ীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই পদক্ষেপ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে অর্থনৈতিক কৌশলের সমন্বয়কে প্রতিফলিত করে, যা পাকিস্তানের অর্থনীতির উপরও চাপ সৃষ্টি করবে।