অস্ট্রেলিয়ায় লেবারের ঐতিহাসিক জয়, অ্যালবানিজের নেতৃত্বে নতুন অধ্যায়ের শুরু

অস্ট্রেলিয়ায় লেবারের ঐতিহাসিক জয়, অ্যালবানিজের নেতৃত্বে নতুন অধ্যায়ের শুরু

অস্ট্রেলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ২০২৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে, যা তাকে গত দুই দশকের মধ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে। শনিবারের নির্বাচনের ফলাফলে লেবার পার্টি ১ – এর মধ্যে লেবার পার্টি ১৫০ আসনের প্রতিনিধি সভায় ৭০টি আসন নিশ্চিত করেছে, এবং এবিসি’র রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্টনি গ্রিনের মতে, এটি ৭৬টি আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিরোধী লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন মাত্র ২৪টি আসনে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে, যখন ১৩টি আসন স্বতন্ত্র ও ছোট দলগুলোর হাতে যেতে পারে। “অস্ট্রেলিয়ার জনগণ সুযোগ, ন্যায্যতা এবং আশাবাদের পক্ষে রায় দিয়েছে,” সিডনির ক্যান্টারবেরি-হার্লস্টোন পার্ক আরএসএল ক্লাবে উল্লাসিত সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন অ্যালবানিজ।

নির্বাচনী প্রচারণায় জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং শক্তি নীতি ছিল প্রধান ইস্যু। বিরোধী নেতা পিটার ডাটন লেবারের ব্যয়বহুল নীতির জন্য মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হার বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে পাবলিক সেক্টরে ব্যাপক ছাঁটাই এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির পরিবর্তে পারমাণবিক শক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অ্যালবানিজ এই নীতির তুলনা আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে করে ডাটনকে ‘DOGE-y Dutton’ বলে কটাক্ষ করেন। “ডাটনের প্রচারণা বিভাজন সৃষ্টি করেছে, যা অস্ট্রেলিয়ার মূল্যবোধের পরিপন্থী,” বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যামি রেমেইকিস। ফলাফলে ডাটন শুধু নির্বাচনই হারেননি, ব্রিসবেনের ডিকসন আসনও হারিয়েছেন, যা তিনি ২০০১ সাল থেকে ধরে রেখেছিলেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যালবানিজ তার সরকারের চীন নীতিকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেন, উল্লেখ করে যে ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর চীন অস্ট্রেলিয়ান রপ্তানির উপর থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তিনি মে মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনার কথাও বলেছেন, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াবে। তবে, এই জয়ের পর অ্যালবানিজের সামনে দেশীয় অর্থনৈতিক সংস্কার এবং ট্রাম্পের শুল্ক নীতির মতো বৈশ্বিক চাপ মোকাবিলার দ্বৈত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। “এই জয় আমাদের দায়িত্ব বাড়িয়েছে, এবং আমরা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করব,” বলেছেন তিনি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *