বিজয় দিবসের আগে ইউক্রেনের হুংকার, রাশিয়ার উপর ড্রোন-মিসাইল হামলা

বিজয় দিবসের আগে ইউক্রেনের হুংকার, রাশিয়ার উপর ড্রোন-মিসাইল হামলা

বিজয় দিবসের কয়েক দিন আগে ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে ইউক্রেন ক্রিমিয়া ও রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায়। রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ৭ ঘণ্টার মধ্যে ১৭০টি ড্রোন ও ১১টির বেশি মিসাইল ধ্বংস করেছে। এই হামলায় রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীতে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এই আক্রমণকে বিজয় দিবসের আগে ‘ট্রেলার’ বা সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। জেলেনস্কি এর আগে বলেছিলেন, বিজয় দিবসে রাশিয়ায় কোনো বিশ্বনেতা গেলে ‘অপ্রত্যাশিত ঘটনা’ ঘটতে পারে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১০টা থেকে শনিবার ভোর ৫টার মধ্যে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট ক্রিমিয়ার আকাশে ৯৬টি, ক্রাসনোদারে ৪৭টি, রোস্তভে ৯টি এবং ব্রায়ানস্ক ও কুর্স্কে ৮টি করে ড্রোন ধ্বংস করেছে। বেলগোরোদে দুটি রোবোটিক বিমানও নিষ্ক্রিয় করা হয়। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন ব্রিটেন থেকে পাওয়া আটটি স্টর্ম শ্যাডো ক্রুজ মিসাইল ও তিনটি নেপচুন-এমডি মিসাইল ব্যবহার করেছিল, যা কালো সাগরের উপর ধ্বংস করা হয়। এছাড়া, ইউক্রেনের নৌবাহিনীর ১৪টি সমুদ্র ড্রোনও নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। রাশিয়ার অভিযোগ, এই হামলায় পশ্চিমা সামরিক সহায়তা ছিল।

এই হামলার মর্মান্তিক পরিণতি হলো বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি। রোস্তভের গভর্নর ইউরি স্লিসার জানান, ড্রোনের ধ্বংসাবশেষে সেলিনা গ্রামে একটি বাড়ির ছাদে আগুন লেগে দুই শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। একটি খালি ভবনও ধসে পড়েছে। এই ঘটনা যুদ্ধের ভয়াবহতা সাধারণ মানুষের জীবনেও ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেয়।

এদিকে, ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন এসেছে। আমেরিকা, যিনি এতদিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন, এখন নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, “এটি আমাদের যুদ্ধ নয়।” তবে একদিন আগে আমেরিকা ইউক্রেনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা সামরিক নয়, কৌশলগত অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে ইঙ্গিত করে। জেলেনস্কির এই হামলা রাশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *