চিন্তামন গণেশের আশীর্বাদে মোবাইল ছাড়ছে শিশুরা, উজ্জয়িনীতে উৎসাহী অভিভাবকরা

ধর্মীয় নগরী উজ্জয়িনীর চিন্তামন গণেশ মন্দিরে এক অভিনব দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। লক্ষ্মণ বাওড়ির কাছে অবস্থিত এই বিঘ্নহর্তা গণেশ মন্দিরে প্রতিদিন অসংখ্য অভিভাবক তাদের সন্তানদের মোবাইলের নেশা থেকে মুক্ত করতে সংকল্প গ্রহণ করাতে আসছেন। শিশুরা পূজা-অর্চনার পর গণেশের বাহন মূষকের কানে তাদের মনোবাঞ্ছা ফিসফিস করে বলছে। মন্দিরের পুরোহিত ঈশ্বর শর্মা জানান, এই সংকল্পের ফলে শতাধিক শিশু ইতিমধ্যে মোবাইল গেম এবং রিল দেখা বন্ধ করেছে।
মন্দিরটি শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পুরোহিত ঈশ্বর শর্মা বলেন, “অনেক অভিভাবক অভিযোগ করতেন যে তাদের সন্তানরা মোবাইলে আসক্ত। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে জরুরি কাজও মোবাইল ছাড়া করতে চায় না। তারা কখনো রিল দেখে, কখনো ইউটিউবে সময় কাটায়।” এই সমস্যার সমাধানে মন্দিরে শিশুদের সংকল্প গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ফলস্বরূপ, অনেক শিশু মোবাইলের ব্যবহার কমিয়ে পড়াশোনায় মন দিচ্ছে। অভিভাবকরা ফোনে বা সরাসরি এসে জানিয়েছেন, তাদের সন্তানদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ছুটির দিনগুলোতে মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। অনেক অভিভাবক তিন থেকে চারটি বুধবার ধরে সন্তানদের নিয়ে এসে পূজা ও সংকল্প করাচ্ছেন। শিশুরা মূষকের কানে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। মনোবিদ ড. পরাগ ঢোবলে এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “মোবাইলের নেশা থেকে শিশুদের দূরে রাখতে ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে এই পদক্ষেপ একটি চমৎকার প্রয়াস। অভিভাবকরা এই সমস্যায় জর্জরিত, এবং এই পদ্ধতি তাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।”
এই মন্দিরের এই উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় আচারই নয়, বরং আধুনিক সমস্যার একটি সৃজনশীল সমাধান। উজ্জয়িনীর এই প্রচেষ্টা শিশুদের ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্ত করার পাশাপাশি পড়াশোনা ও সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি উৎসাহিত করছে।