পাকিস্তানের যুদ্ধ ক্ষমতায় ধস, গোলাবারুদের ঘাটতিতে চার দিনের বেশি লড়াই আসাম্ভব

পাকিস্তানের যুদ্ধ ক্ষমতায় ধস, গোলাবারুদের ঘাটতিতে চার দিনের বেশি লড়াই অসম্ভব

পাকিস্তানের যুদ্ধ ক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের কাছে উচ্চ তীব্রতার যুদ্ধের জন্য মাত্র চার দিনের কামানের গোলাবারুদ মজুত রয়েছে। ইউক্রেন ও ইসরায়েলে সাম্প্রতিক অস্ত্র রপ্তানির কারণে পাকিস্তানের গোলাবারুদের ভাণ্ডার প্রায় শূন্য। এই পরিস্থিতি পড়শি দেশটির প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকে ভয়াবহভাবে দুর্বল করেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এম১০৯ হাউইৎজার, বিএম-২১ মাল্টিপল রকেট লঞ্চার এবং সম্প্রতি সংযোজিত এসএইচ-১৫ মাউন্টেড গান সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সূত্র জানায়, এই অস্ত্রগুলির জন্য পর্যাপ্ত গোলাবারুদ নেই, এমনকি নতুন এসএইচ-১৫ কামানের জন্যও মজুত শূন্য। ফলে পাকিস্তানের সামরিক শক্তি এখন কেবল প্রদর্শনের জন্যই সীমাবদ্ধ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় গোলাবারুদের বিশ্বব্যাপী চাহিদা বৃদ্ধি পায়, এবং পাকিস্তান এই সুযোগকে অর্থনৈতিক লাভে রূপান্তরিত করে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে পাকিস্তান ইউক্রেনে ৪২,০০০ বিএম-২১ রকেট, ৬০,০০০ ১৫৫ মিমি হাউইৎজার শেল এবং ১৩০,০০০ অন্যান্য রকেট রপ্তানি করে, যা থেকে ৩৬৪ মিলিয়ন ডলার আয় হয়। এই লেনদেনের ৮০% লাভ সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে (জিএইচকিউ) যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তানের অস্ত্র রপ্তানি ৪১৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩,০০০% বৃদ্ধি। কিন্তু এই আর্থিক লাভের বিনিময়ে পাকিস্তান নিজের গোলাবারুদ ভাণ্ডার খালি করে ফেলেছে, যা তাদের কামান-নির্ভর যুদ্ধ কৌশলের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুরবস্থা এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। বিপুল ঋণ, প্রায় শূন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং জ্বালানি ও রসদের ঘাটতি সেনাবাহিনীকে জর্জরিত করছে। সামরিক মহড়া বন্ধ করা হয়েছে, এমনকি ট্যাঙ্ক চালানোর জন্য পেট্রোলের অভাব রয়েছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া স্বীকার করেছিলেন, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধে পাকিস্তান টিকতে পারবে না। ২ মে, ২০২৫-এর বিশেষ কর্পস কমান্ডার্স কনফারেন্সে এই গোলাবারুদ সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, যেখানে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা পরিস্থিতির গুরুত্ব স্বীকার করেন।

অন্যদিকে, ভারত ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্র আমদানি ৬০% বাড়িয়েছে এবং গোলাবারুদের বিশাল মজুত তৈরি করেছে, যা দুই মাসের তীব্র যুদ্ধ সহ্য করতে পারে। পাকিস্তানের গোলাবারুদ সংকট তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলকে নাজুক করেছে, যেখানে ভারতের সামরিক শক্তি (১.৪৬ মিলিয়ন সৈন্য, ৪,২০১ ট্যাঙ্ক, ৮১ বিলিয়ন ডলার বাজেট) পাকিস্তানকে (৬,৫৪,০০০ সৈন্য, ২,৬২৭ ট্যাঙ্ক, ১০ বিলিয়ন ডলার বাজেট) অনেক পিছনে ফেলেছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যুদ্ধ হলে পাকিস্তান চার দিনের বেশি টিকতে পারবে না, যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *