সাইবার নিরাপত্তা ও KYC লঙ্ঘন, ৫ বড় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আরবিআই-এর ২.৫২ কোটি টাকার জরিমানা

সাইবার নিরাপত্তা ও KYC লঙ্ঘন, ৫ বড় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আরবিআই-এর ২.৫২ কোটি টাকার জরিমানা

মুম্বই: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) সাইবার নিরাপত্তা, গ্রাহক পরিষেবা এবং KYC (নো ইয়োর কাস্টমার) নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাঙ্কের উপর ২.৫২ কোটি টাকার জরিমানা আরোপ করেছে। শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫-এ ঘোষিত এই জরিমানা আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্রের উপর পড়েছে। আরবিআই জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা লঙ্ঘনের জন্য, এবং এটি গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের লেনদেনের বৈধতার উপর কোনো রায় নয়। এই পদক্ষেপ ব্যাঙ্কিং খাতে নিয়মানুবর্তিতার গুরুত্ব তুলে ধরে।

আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক সর্বোচ্চ ৯৭.৮০ লক্ষ টাকা জরিমানার মুখে পড়েছে। আরবিআই-এর অভিযোগ, ব্যাঙ্কটি একটি সাইবার নিরাপত্তা ঘটনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট করেনি, কিছু অ্যাকাউন্টের জন্য কার্যকর সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এবং ক্রেডিট কার্ডের বিল না পাঠিয়ে গ্রাহকদের উপর দেরি ফি চাপিয়েছে। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের উপর ২৯.৬০ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ হয়েছে, কারণ এটি অভ্যন্তরীণ অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেন পরিচালনা করেছে। ব্যাঙ্ক অব বরোদা ৬১.৪০ লক্ষ টাকা জরিমানার মুখে পড়েছে, কারণ এটি নিষ্ক্রিয় বা ফ্রিজ করা সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে নিয়মিত সুদ প্রদান করেনি এবং বীমা বিক্রির জন্য কর্মীদের অ-নগদ প্রণোদনা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে।

আইডিবিআই ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র প্রত্যেকে ৩১.৮০ লক্ষ টাকা জরিমানার সম্মুখীন। আইডিবিআই কিসান ক্রেডিট কার্ড (KCC) অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত সুদ আরোপ করেছে, যা কৃষকদের জন্য সরকারের সুদ ছাড় স্কিম লঙ্ঘন করেছে। ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র আধার OTP-ভিত্তিক ই-কেওয়াইসি ব্যবহার করে মুখোমুখি যাচাই ছাড়া সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এই ত্রুটিগুলি ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের আরবিআই-এর স্ট্যাটুটরি ইন্সপেকশন ফর সুপারভাইজরি ইভালুয়েশন (ISE)-এ ধরা পড়ে।

আরবিআই-এর এই পদক্ষেপ ব্যাঙ্কিং খাতে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং গ্রাহক সুরক্ষার উপর জোর দেয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জরিমানা ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বাধ্য করবে। “গ্রাহকদের নিরাপত্তা এবং নিয়ম মেনে চলা এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত,” বলেন আর্থিক বিশেষজ্ঞ প্রিয়া শর্মা। গ্রাহকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, তাদের ব্যাঙ্কের KYC আপডেট এবং পরিষেবা সম্পর্কে সচেতন থাকতে। এই ঘটনা ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রক তদারকির গুরুত্ব তুলে ধরে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *